আকাশগঙ্গা ছায়াপথ
সৌরজগতকে ধারণকারী সর্পিলাকার ছায়াপথ / From Wikipedia, the free encyclopedia
আমাদের নিজস্ব সৌরজগৎ আকাশগঙ্গা (Milky Way) নামক ছায়াপথের অন্তর্ভুক্ত। রাতের আকাশে দুধের মতো যে হালকা সাদা আলোর রেখা দেখা যায়, সেখান থেকেই এর নামকরণ। অসংখ্য নক্ষত্রের এই আলোকে খালি চোখে আলাদা করা যায় না বলেই এমন রেখার মতো দেখা যায়।
পর্যবেক্ষণ তথ্য | |
---|---|
ধরন | Sb, Sbc, বা SB(rs)bc[1][2] (দন্ডযুক্ত সর্পিল ছায়াপথ) |
ব্যাস | ১০০–১৮০ kly (৩১–৫৫ kpc)[1][3] |
সরু নাক্ষত্রিক ডিস্কের ঘনত্ব | ≈২ kly (০.৬ kpc)[4][5] |
তারার সংখ্যা | ২০০–৪০০ বিলিয়ন (৩×১০১১ ±১×১০১১)[6][7][8] |
প্রাচীনতম তারকা | ≥১৩.৭ Gyr[9] |
ভর | ০.৮–১.৫×১০১২ M☉[10][11][12] |
কৌণিক ভরবেগ | ১ ×১০৬৭ J s [13] |
ছায়াপথের কেন্দ্র থেকে সূর্যের দূরত্ব | ২৭.২ ± ১.১ kly (৮.৩৪ ± ০.৩৪ kpc)[14] |
সূর্যের ছায়াপথের আবর্তনের সময়কাল | ২৪০ Myr[15] |
সর্পিল প্যাটার্ন আবর্তন কাল | ২২০–৩৬০ Myr[16] |
বার প্যাটার্ন আবর্তন কাল | ১০০–১২০ Myr[16] |
সিএমবি বাকি গঠন থেকে আপেক্ষিক গতি | ৫৫২ ± ৬ কিমি./সে.[17] |
সূর্যের অবস্থান থেকে অব্যাহতি বেগ | ৫৫০ কিমি./সে.[12] |
সূর্যের অবস্থান থেকে গুপ্ত পদার্থের ঘনত্ব | ০.০০৮৮+০.০০২৪ -০.০০১৮ M☉pc-৩ বা ০.৩৫+০.০৮ -০.০৭ GeV cm-৩[12] |
আরও দেখুন: ছায়াপথ, ছায়াপথসমূহের তালিকা |
আকাশগঙ্গা একটি সর্পিলাকার ছায়াপথ, যার কেন্দ্রে একটি দণ্ডের মতো অংশ আছে। এর ব্যাস প্রায় ২৬.৮ ± ১.১ কিলোপারসেক (৮৭,৪০০ ± ৩,৬০০ আলোকবর্ষ),[18] তবে সর্পিলাকার বাহুগুলোর বেধ মাত্র ১০০০ আলোকবর্ষের মতো। সাম্প্রতিক গবেষণা অনুযায়ী, অদৃশ্য 'ডার্ক ম্যাটার'-সহ কিছু নক্ষত্রের সমন্বয়ে এর ব্যাস প্রায় ২০ লক্ষ আলোকবর্ষ (৬১৩ কিলোপারসেক) পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। আকাশগঙ্গার বেশ কয়েকটি ছোট উপগ্রহ গ্যালাক্সি রয়েছে। এটি নিজেও 'লোকাল গ্রুপ' নামক গ্যালাক্সিপুঞ্জের অংশ, যেটা আবার 'ভার্গো সুপারক্লাস্টারের' একটি অংশ। পুরো সুপারক্লাস্টারটি আবার 'লানিয়াকিয়া সুপারক্লাস্টারের' একটি উপাদান।[19][20]
আকাশগঙ্গায় ১০০ থেকে ৪০০ বিলিয়ন নক্ষত্র আছে বলে ধারণা করা হয়[21][22] এবং অন্তত সমসংখ্যক গ্রহও রয়েছে।[23] আমাদের সৌরজগৎ গ্যালাক্সির কেন্দ্র থেকে প্রায় ২৭,০০০ আলোকবর্ষ (৮.৩ কিলোপারসেক) দূরে অবস্থিত। আমরা 'ওরিয়ন আর্ম' নামক সর্পিলাকার বাহুর অভ্যন্তরীণ প্রান্তে অবস্থান করছি। গ্যালাক্সির কেন্দ্রের ১০,০০০ আলোকবর্ষের মধ্যে নক্ষত্রগুলো একটি বড় উঁচু অংশের (Bulge) সৃষ্টি করেছে এবং কেন্দ্র থেকে এক বা একাধিক দণ্ডাকৃতির অংশ ছড়িয়ে আছে। গ্যালাক্সির একেবারে কেন্দ্রে 'স্যাজিটারিয়াস এ*' নামে একটি প্রচণ্ড রেডিও তরঙ্গের উৎস আছে, যেটি আসলে প্রায় ৪১ লক্ষ সৌর ভরের একটি অতিবৃহৎ কৃষ্ণগহ্বর।[24][25] আকাশগঙ্গার প্রাচীনতম নক্ষত্রগুলো প্রায় বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সমানই পুরনো, অর্থাৎ বিগ ব্যাং-এর অন্ধকার যুগের পরপরই এদের জন্ম হয়েছে।[9]
১৬১০ সালে গ্যালিলিও গ্যালিলি প্রথম দূরবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে আকাশগঙ্গার আলোর রেখাকে পৃথক নক্ষত্র হিসেবে শনাক্ত করেন। ১৯২০ সালের আগ পর্যন্ত বেশিরভাগ জ্যোতির্বিজ্ঞানী মনে করতেন আকাশগঙ্গার মধ্যেই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সকল নক্ষত্র রয়েছে।[26] ১৯২০ সালে জ্যোতির্বিজ্ঞানী হারলো শেপলি এবং হিবার ডোস্ট কার্টিসের মধ্যকার একটি বিখ্যাত বিতর্কের পর এডউইন হাবলের পর্যবেক্ষণে প্রমাণিত হয় যে আকাশগঙ্গা অসংখ্য গ্যালাক্সির মধ্যে মাত্র একটি।