যুগোস্লাভ অভ্যুত্থান
From Wikipedia, the free encyclopedia
১৯৪১ সালের ২৭ এপ্রিল তৎকালীন যুগোস্লাভিয়ার বেলগ্রেডে যুগোস্লাভ অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। এর মাধ্যমে যুবরাজ পলের যৌবরাজ্যকে উৎখাত করে রাজা দ্বিতীয় পিটারের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা হয়। জেনারেল দুসান সিমোভিচ-এর অধীনে পশ্চিমাপন্থি সার্বীয় জাতীয়তাবাদী রাজকীয় যুগোস্লাভ বিমানবাহিনীর কর্মকর্তারা এর নেতৃত্ব প্রদান করেন। ১৯৩৮ সাল থেকেই সিমোভিচ সফল অভ্যুত্থান পরিচালনার পরিকল্পনা করেছিলেন। এর অন্যান্য প্রধান সংগঠক ছিলেন সামরিক উড্ডয়নের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বরিভোজে মার্কোভিচ, যুগোস্লাভ রাজকীয় বাহিনীর মেজর জিভান নেজেভিচ ও তার ভাই রাদোজে নেজেভিচ। বেসামরিক নেতৃত্ব সম্ভবত এই পরিকল্পনা সম্বন্ধে অবগত ছিলেন। অভ্যুত্থান সংঘটিত হওয়ামাত্রই তারা একে সমর্থন করতে এগিয়ে আসেন। কিন্তু বেসামরিক নেতৃবৃন্দ এর সংঘটনে অংশগ্রহণ করেননি।
যুগোস্লাভ সাম্যবাদী দল এতে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেনি । কিন্তু অভ্যুত্থান সংঘটিত হওয়ামাত্রই সাম্যবাদী দল এর সমর্থনে বিরাট জনসমাবেশের আয়োজন করে। অভ্যুত্থানপ্রচেষ্টা সাফল্যে পর্যবসিত হয়। যুবরাজ পল, রাদেনকো স্তানকোভিচ ও আইভো পেরোভিচের সমন্বয়ে গঠিত তিন সদস্যের যৌবরাজ্যকে এটি দ্রুত উৎখাত করে। প্রধানমন্ত্রী দ্রাগিসা ভেতকোভিচেরও পতন ঘটে। দুই দিন পূর্বে ভেতকোভিচ সরকার ভিয়েনায় ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। কয়েক মাস ধরেই অভ্যুত্থান সংঘটনের পরিকল্পনা করা হলেও ভেতকোভিচ সরকারের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর একে ত্বরান্বিত করে। ব্রিটিশ স্পেশাল অপারেশনস এক্সিকিউটিভ এর অন্যতম মদদদাতা ছিলো।
১৭ বছর বয়সী রাজা দ্বিতীয় পিটারকে অভ্যুত্থানকারীরা সিংহাসনে আরোহণের উপযুক্ত ঘোষণা করা হয়। সিমোভিচকে প্রধানমন্ত্রী করে ভ্লাদকো মাচেক ও স্লোবোদান জোভানোভিচ-কে উপপ্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করা হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে জার্মানরা যুগোস্লাভিয়া আক্রমণ করে। জার্মানদের সোভিয়েত আক্রমণের পরিকল্পনা (অপারেশন বারবারোসা) বিলম্বিত করায় এ অভ্যুত্থানের তাৎপর্য আজও বিতর্কিত। তবে অনেক ঐতিহাসিক বলেছেন, প্রকৃতপক্ষে অক্ষশক্তির অভিযানে এটি প্রভাব ফেলেনি।