রক্ত
From Wikipedia, the free encyclopedia
রক্ত হলো মানুষ ও অন্যান্য মেরুদণ্ডী প্রাণীর সংবহন তন্ত্রের একটি দৈহিক তরল যা কোষে প্রয়োজনীয় পদার্থসমূহ যেমন পুষ্টিদায়ক পদার্থ ও অক্সিজেন সরবরাহ করে এবং কোষ থেকে [[বিপাকীয় রেচন|বিপাকীয় রেচন পদার্থ] কোষসমূহ থেকে দূরে বহন করে নিয়ে যায়।[1] সংবহন তন্ত্রের রক্ত প্রান্তীয় রক্ত নামেও পরিচিত, এবং এটি যে রক্তকণিকাসমূহ বহন করে তা প্রান্তীয় রক্ত কণিকা নামে পরিচিত।[2]
রক্ত | |
---|---|
বিস্তারিত | |
শনাক্তকারী | |
লাতিন | হিমা (haema) |
মে-এসএইচ | D001769 |
টিএ৯৮ | A12.0.00.009 |
টিএ২ | 3892 |
এফএমএ | FMA:9670 |
শারীরস্থান পরিভাষা |
রক্ত রক্তকণিকা দিয়ে গঠিত যেগুলো রক্তরস বা প্লাজমাতে ভাসমান অবস্থায় থাকে। রক্তের ৫৫% হলো রক্তরস বা প্লাজমা যার অধিকাংশই পানি বা জল(আয়তনে প্রায় ৯২%),[3] এছাড়াও রক্তরসে প্রোটিন, গ্লুকোজ, খনিজ আয়ন, হরমোন, কার্বন ডাই অক্সাইড (রক্তরস রেঢন পদার্থ পরিবহণের প্রধান মাধ্যম হওয়ায়), ও রক্তকণিকা বিদ্যমান। রক্তরসের প্রধান প্রোটিন হলো; অ্যালবিউমিন, যা রক্তের কলোয়ডাল অভিস্রবণিক চাপ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। রক্তকণিকাগুলো লোহিত রক্তকণিকা (RBC বা ইরিথ্রোসাইট নামেও পরিচিত), শ্বেত রক্তকণিকা, (WBC বা লিউকোসাইট নামেও পরিচিত) ও অণুচক্রিকা (প্লেটলেট বা থ্রম্বোসাইট নামেও পরিচিত)।[4] মেরুদণ্ডী প্রাণীদের সবচেয়ে বেশি থাকে লোহিত রক্তকণিকা,[5] এর মধ্যে থাকে হিমোগ্লোবিন নামক লৌহসমৃদ্ধ প্রোটিন যা রক্তে অক্সিজেন পরিবহণের কাজ করে।[6] অপরদিকে, কার্বন ডাই-অক্সাইড প্রধানত বহিঃকোষীয়ভাবে পরিবাহিত হয় কারণ বাইকার্বনেট আয়ন রক্তরসে পরিবাহিত হয়। মেরুদণ্ডী প্রাণীদের রক্তের হিমোগ্লোবিন অক্সিজেনের সাথে যুক্ত হলে রং উজ্জ্বল লাল বর্ণের হয় এবং অক্সিজেন মুক্ত হলে গাঢ় লাল বর্ণের হয়।[7] কিছু প্রাণী, যেমন ক্রাস্টেশান বা কবচী ও কম্বোজ প্রাণী অক্সিজেন পরিবহণের জন্য হিমোগ্লোবিনের পরিবর্তে হিমোসায়ানিন ব্যবহার করে।[8] কীটপতঙ্গ ও কিছু মলাস্ক বা কম্বোজ প্রাণী রক্তের পরিবর্তে হিমোলিম্ফ নামক তরল ব্যবহার করে। হিমোলিম্ফ বদ্ধ সংবহনতন্ত্রের মধ্যে থাকে না।
রক্ত হৃদ্যন্ত্রের পাম্প বা সঞ্চালন ক্রিয়ার ফলে রক্তনালির মধ্য দিয়ে সারা দেহে পরিবাহিত হয়। ফুসফুসবিশিষ্ট প্রাণীদের ক্ষেত্রে, ধামনিক রক্ত প্রশ্বাসের মাধ্যমে টেনে নেওয়া বায়ু থেকে অক্সিজেন দেহের, টিসুতে বহন করে এবং শিরাস্থ রক্ত কোষে উৎপন্ন কার্বন ডাই-অক্সাইড টিসু থেকে ফুসফুসে বহন করে নিয়ে যায়।
রক্ত সম্পর্কিত চিকিৎসা পরিভাষা প্রায়শই hemo- (হিমো-) অথবা hemato- (হিমাটো-) দিয়ে শুরু হয় (এগুলোর ব্রিটিশ বানান যথাক্রমে haemo- ও haemato-), এটি এসেছে গ্রিক শব্দ αἷμα (হাইমা) থেকে যার অর্থ "রক্ত"। শারীরস্থান ও কলাস্থানবিদ্যার পরিভাষায় রক্ত হলো একটি বিশেষ ধরনের তরল যোজক কলা[9]