রসায়ন প্রকৌশল
রসায়ন বিষয়ক পড়াশোনার একটি শাখা / From Wikipedia, the free encyclopedia
রসায়ন প্রকৌশল বা কেমিকৌশল প্রকৌশল বিদ্যার একটি শাখা যেখানে ভৌত বিজ্ঞানের (যথা: রসায়ন বা পদার্থ বিজ্ঞান) সাথে গণিতের সামঞ্জস্য ঘটিয়ে কোনো কাঁচামালকে বিশেষ পদ্ধতির মাধ্যমে উৎকৃষ্ট পদার্থে পরিণত করা হয়। মূলত কেমিকৌশলীদের কাজের ক্ষেত্র আলাদাকরণ বা উপাদান বিশ্লেষণ, পেট্রোলিয়াম পরিশোধন ও রাসায়নিক কারখানার বিভিন্ন ইউনিট নকশা করা এবং শক্তির অপচয় রোধ করে কম খরচে উন্নতমানের বেশি উৎপাদক (প্রোডাক্ট) পাওয়া হলেও, আধুনিক বিশ্বে রসায়ন প্রকৌশলের ক্ষেত্র অনেক বিস্তৃত ও ব্যাপক হয়েছে। ন্যানোটেকনোলজি, প্রোসেস কন্ট্রোল, বায়োকেমিক্যাল ও বায়োমেডিক্যাল, সেমি-কন্ডাক্টর ও ডিসপ্লে বিদ্যা, পরিবেশ বিদ্যা, পলিমার বিদ্যা, ঔষধ শিল্প, বস্ত্র শিল্প, নিউক্লিয়ার বিদ্যা, নবায়নযোগ্য শক্তি ইত্যাদি বিষয়াদির উপর রসায়ন প্রকৌশলীগণ ব্যাপক গবেষণা করছেন।
১৮২৪ সালে ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানী সাদী কারণট, তার On the Motive Power of Fire বইয়ে দহন প্রতিক্রিয়ার তাপগতিবিদ্যা সম্পর্কে প্রথম উল্লেখ করেছিলেন। ১৮৫০-এ জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী রুডল্ফ ক্লাসিয়াস আণবিক ও পারমাণবিক স্কেলে সাদী কারণট-এর রাসায়নিক সিস্টেমের প্রধান ও মূল তত্ত্বের নীতি প্রয়োগ করতে শুরু করেছিলেন। ১৮৭৩ সাল থেকে ১৮৭৬ সালে ইয়েল বিশ্ববিদ্যাল মার্কিন গণিতবিদ পদার্থবিজ্ঞানী জোসিয়া উইলার্ড গিবসকে প্রথম বছর পি.এইচ.ডি. ডিগ্রি প্রদান করে। কারণ তিনি তিনটি ধাপে গবেষণাধর্মী লেখা জমা দেন। তার গবেষণার বিষয়বস্তু গাণিতিক ভিত্তি, গ্রাফিক্যাল মেথডলজি'র উন্নতি সাধন করে ক্লাসিয়াস-এর তাপগতিবিদ্যার ব্যবহারের মাধ্যমে রাসায়নিক সিস্টেম শেখান। ১৮৮২ সালে জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী হারমান ভন হেলমহজ গিবস এর মত একটি খুজে পাওয়া তাপগতিবিদ্যা নামক প্রকাশনা করেছিলেন। কিন্তু এটি ইলেকট্রো কেমিক্যালকে ভিত্তি করে তৈরি। যাতে তিনি দেখিয়েছিলেন রাসায়নিক সাদৃশ্যের পরিমাপ, অর্থাৎ রাসায়নিক প্রতিক্রিয়ার “বল”, প্রতিক্রিয়া পদ্ধতির মুক্ত শক্তির মাপনের দ্বারা নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়াও সারা বিশ্বে বর্তমানে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যা বর্তমানে প্রতিটি ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয়। যেগুলো হলো:
- সার কারখানাসমূহ
- পেপার মিলসমূহ
- গ্লাস ইন্ডাস্ট্রি
- সিরামিক্স ইন্ডাস্ট্রি
- পেইন্ট ইন্ডাস্ট্রি (সকল প্রকার রঙ)
- ঔষধ শিল্প
- খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প
- পানি পরিশোধন প্লান্ট
- তেল পরিশোধন প্লান্ট (ভোজ্য ও জ্বালানি)
- কীটনাশক প্রস্তুতকরণ কোম্পানী
- প্লাস্টিক শিল্প
- টেক্সটাইল শিল্প
- কসমেটিক্স শিল্প
- গ্যাস ফিল্ড
- ওয়াসা
- সিমেন্ট কারখানা
- পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্লান্ট
- সমরাস্ত্র কারখানা
- ট্যানারী শিল্প (লেদার)
- তাজা সবজি ও ফলমূল সংরক্ষণাগার
- বীজ সংরক্ষণাগার
- টাকশাল
তবে সকল ক্ষেত্রে কাজে পারদর্শীতা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে থাকে।