গোত্র (হিন্দুধর্ম)
From Wikipedia, the free encyclopedia
গোত্র শব্দটির অর্থ বংশ বা গোষ্ঠীকে বোঝায়। সনাতন ধর্মে গোত্র মানে একই পিতার ঔরসজাত সন্তান-সন্ততি (সমূহ) দ্বারা সৃষ্ট বংশ পরম্পরা। কিন্তু গোত্র দ্বারা কখনো কখনো অঞ্চল এবং বিশেষ চিহ্ন নির্দেশ করে (টোটেম)। বৈদিক শাস্ত্র অনুসারে, বংশের রক্ত প্রবাহিত হয় পুরুষ পরম্পরায়। সুতরাং বংশের রক্তের ধারক এবং বাহক হলো পুরুষ। সনাতন ধর্মের বংশ রক্ষার ধারায় ছিলেন, প্রথম সত্য যুগের শুরুতে ব্রহ্মার মানস সন্তানদের মধ্যে অন্যতম ঋষিগণ। পরবর্তীকালে অন্যান্য ঋষির বংশ পরম্পরাও পরিলক্ষিত হয়।
এই একেকজন ঋষির বংশ পরম্পরা তাদের নামে এক একটি গোত্র হিসেবে পরিচিত লাভ করে। সে হিসেবে একই গোত্রের বংশীয়গণ পরস্পর ভাইবোন। এমনকি একই বংশের স্বজনেরা পরবর্তীকালে জীবিকা নির্বাহের প্রয়োজনে, সাধন-ভজন, পরমেশ্বর ভগবানের বাণী প্রচারের প্রয়োজনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়লে পিতার নামের সাথে গোত্র নামের গুরুত্ব প্রকাশ পায়। যেমন- কাশ্যপ মুনির বংশধরেরা নিজেদের “কাশ্যপ গোত্রস্য” বা কাশ্যপ মুনির বংশ পরিচয় দিয়ে থাকেন।
এভাবে পর্যায়ক্রমে আরও অনেক গোত্রের নাম পাওয়া যায়। সনাতন ধর্মে প্রকট আছে/অহরহ যেসব গোত্র দেখা যায় তা হলো কাশ্যপ গোত্র, ভর্দ্বাজ গোত্র, বশিষ্ট গোত্র, বৃহস্পতি গোত্র, বিশ্বামিত্র গোত্র, জাম্দগ্ন্য গোত্র, শিব গোত্র, মৌদ্গল্য গোত্র, ভার্গব গোত্র, শান্ডিল্য গোত্র, আলম্ব্যয়ন গোত্র, ধন্ন্বন্তরী গোত্র, গৌতম গোত্র, পরাশর গোত্র, সাবর্ণ গোত্র,রাম গোত্র, ইত্যাদি। একই গোত্রের লোকজনকে সম্গোত্রীয় বলা হয়। সোজা কথা এরা পরস্পর নিকট-আত্মীয়। আর অন্যান্য গোত্রের লোকজনের সাথে তারা পরস্পর আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ এই কারণে যে, আমরা সবাই প্রপিতামহ ব্রহ্মা থেকে এসেছি যদিও আমাদের আদি পিতা-মাতা যথাক্রমে মনু ও শতরূপা।