আর্দ্রা
তারা / From Wikipedia, the free encyclopedia
আর্দ্রা (ইংরেজি: Betelgeuse) আকাশের কালপুরুষ নক্ষত্রমন্ডলভুক্ত একটি তারা। বেয়ার নামকরণের নিয়মে এর নাম Alpha Orionis। আর্দ্রা আকাশের অষ্টম এবং কালপুরুষ নক্ষত্রমণ্ডলের দ্বিতীয় উজ্জ্বল তারা। এর ঋগ্বেদীয় নাম রুদ্র আর সৈদ্ধান্তিকরা ডাকে আর্দ্রা নামে।
এই তারাটি বিষম এবং এটির আপাত মান ০.২ থেকে ১.২ এর মধ্যে সীমিত। আর্দ্রা, লুব্ধক ও প্রভাস এই তিনটি তারা দিয়ে শীতকালীন ত্রিভুজের কল্পনা করা হয়।
খালি চোখে লালচে দেখতে এই তারাটি একটি লাল অতিদানবতারা। আমাদের জানা তারাদের মধ্যে আর্দ্রা অন্যতম বৃহৎ ও উজ্জ্বল তারা। আমরা যদি আর্দ্রাকে সূর্যের স্থানে ভাবি তাহলে সেটার পৃষ্ঠদেশ বৃহস্পতির কক্ষপথ ছাড়িয়ে যেতে পারে। কিন্তু আর্দ্রার দূরত্ত্ব মাপা সহজ হয় নি। গত একশো বছরে এই তারটির দূরত্ত্ব জ্যোতির্বিদরা সর্বনিম্ন ১৮০ থেকে সর্বোচ্চ ১৩০০ আলোকবর্ষ নির্ধারণ করেছিলেন। বর্তমানে এটির দূরত্ত্ব মোটামুটিভাবে ৬৪০ আলোকবর্ষ ধরা হচ্ছে। সেই হিসেবে এর পরম মান হবে -৬.০৫।
সূর্যের পরে আর্দ্রাই হচ্ছে প্রথম তারা যার ব্যাস মাপা সম্ভব হয়েছে (১৯২০ সনে)। যেহেতু সময়ের সাথে সাথে আর্দ্রার আকারের তারতম্য হয় তাই পরবর্তীকালে থেকে অনেক ধরনের দুরবীন ব্যবহার করা সত্ত্বেও আর্দ্রার যথার্থ ব্যাস নির্ধারণ করা একটু কঠিনই হয়েছে। বর্তমানে এর ব্যাস ধরা হয় ০.০৪৩ থেকে ০.০৫৬ কৌণিক সেকেন্ড। এই ব্যাস আবার যে তরঙ্গদৈর্ঘ্যে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে তার ওপর নির্ভর করে। এছাড়া আবার আর্দ্রার পৃষ্ঠ থেকে বিশাল গ্যাসীয় পুঞ্জ অসম ভাবে উৎক্ষিপ্ত হয়। জ্যোতির্বিদরা মনে করেন আর্দ্রার বয়েস মাত্র ১০ মিলিয়ন বা ১ কোটি বছর, কিন্তু বড় ভরের জন্য তারাটির দ্রুত বিবর্তন হয়েছে। অনেকে মনে করেন তারাটি কালপুরুষের OB1 তারাসমষ্টি থেকে বের হয়ে এসেছে। কালপুরুষের বেল্টের তিনটি তারা - অনিরুদ্ধ (আলনিলাম), ঊষা (আলনিটাক) ও চিত্রলেখাকেও (মিনটাকা) এই তারাসমষ্টির অংশ ধরা হয়। আর্দ্রা তার জীবনের শেষ পর্যায়ে আছে এবং আগামী ১ মিলিয়ন বা ১০ লক্ষ বছরের মধ্যে সুপারনোভা হিসেবে তার বিস্ফোরিত হবার সম্ভাবনা আছে।