ইর্কুতস্ক
From Wikipedia, the free encyclopedia
ইর্কুতস্ক (রুশ: Иркутск; বুরিয়াত ও মঙ্গোলীয়: Эрхүү আ-ধ্ব-ব:[ɛrˈxuː]) পূর্ব-মধ্য রাশিয়ার ইর্কুতস্ক ওবলাস্তের (প্রশাসনিক অঞ্চল) দক্ষিণভাগে অবস্থিত একটি নগরী। এটি ইর্কুতস্ক ওবলাস্তের প্রশাসনিক কেন্দ্র ও বৃহত্তম নগরী। শহরটি পূর্ব সাইবেরিয়ার দক্ষিণ-পূর্বভাগে, ইয়েনিসেই নদীর উপনদী আঙ্গারা নদীর তীর ঘেঁষে, ইর্কুত নদী ও আঙ্গারা নদীর সঙ্গমস্থলের কাছেই অবস্থিত। এটি রুশ নগরী ক্রাসনোয়ার্স্ক থেকে ৮৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ও মঙ্গোলিয়ার রাজধানী উলানবাটার থেকে ৫২০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। ২০১০ সালের জনগণনা অনুযায়ী এর জনসংখ্যা ৬ লক্ষ ১৭ হাজার, ফলে এটি জনসংখ্যার বিচারে রাশিয়ার ২৫তম বৃহত্তম নগরী। এটি সাইবেরিয়ার সবচেয়ে বড় নগরগুলির একটি।
ইর্কুতস্ক Иркутск | |
---|---|
City[1] | |
সঙ্গীত: none | |
লুয়া ত্রুটি মডিউল:অবস্থান_মানচিত্ এর 480 নং লাইনে: নির্দিষ্ট অবস্থান মানচিত্রের সংজ্ঞা খুঁজে পাওয়া যায়নি। "মডিউল:অবস্থান মানচিত্র/উপাত্ত/Russia Irkutsk Oblast" বা "টেমপ্লেট:অবস্থান মানচিত্র Russia Irkutsk Oblast" দুটির একটিও বিদ্যমান নয়।ইর্কুতস্কের অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ৫২°১৭′ উত্তর ১০৪°১৭′ পূর্ব | |
দেশ | রাশিয়া |
ফেডারেল বিষয় | Irkutsk Oblast[2] |
প্রতিষ্ঠাকাল | 1661[3] |
সরকার | |
• শাসক | Duma of Irkutsk |
• Mayor[4] | Dmitri Berdnikov[4] |
আয়তন[5] | |
• মোট | ২৭৭ বর্গকিমি (১০৭ বর্গমাইল) |
উচ্চতা | ৪৪০ মিটার (১,৪৪০ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১০ আদমশুমারি)[6] | |
• মোট | ৫,৮৭,৮৯১ |
• আনুমানিক (2018)[7] | ৬,২৩,৮৬৯ (+৬.১%) |
• ক্রম | ২০১০ এ 24th |
• জনঘনত্ব | ২,১০০/বর্গকিমি (৫,৫০০/বর্গমাইল) |
প্রশাসনিক অবস্থা | |
• অধীনস্ত | City of Irkutsk[2][1] |
• রাজধানী | Irkutsk Oblast[2], Irkutsky District[2] |
পৌরসভা অবস্থা | |
• শহুরে জেলা | Irkutsk Urban Okrug[8] |
• রাজধানী | Irkutsk Urban Okrug[8], Irkutsky Municipal District[9] |
সময় অঞ্চল | [10] (ইউটিসি+8) |
ডাক কোড[11] | 664xxx |
ডায়ালিং কোড | +৭ 3952[12] |
City দিন | First Saturday of June |
যমজ শহর | ফোৎসায়েম, শেন-ইয়াং, উলানবাটর, কানাযাওয়া, ইউজিন, নবি সাদ, এভিয়ঁ-লে-বাঁ, গ্রনোবল, দিজোঁ, সিম্ফেরোপুল, ক্রাসনোইয়ার্সক, গ্যাংনেউং, বিয়ালিস্টক |
OKTMO আইডি | 25701000001 |
ওয়েবসাইট | web |
রুশ উপনিবেশ স্থাপনের প্রথম পর্যায়ে ১৬৫২ সালে স্বর্ণ বাণিজ্য ও পশুর লোমের উপর কর আদায়ের একটি শীতকালীন শিবির হিসেবে এটিকে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। ১৬৬১ সালে এখানে একটি দুর্গ নির্মাণ করা হয়। এরপর লোকালয়টি বৈকাল হ্রদ-সংলগ্ন অঞ্চলের একটি কেন্দ্র হয়ে ওঠে এবং চীন ও মঙ্গোলিয়াতে রুশ বাণিজ্যপথের একটি কেন্দ্রে পরিণত হয়। ১৬৮৬ সালে এটিকে শহরের মর্যাদা দেওয়া হয়। ১৭৬০ সালে প্রথম মস্কোর সাথে সড়কপথে এটি সংযুক্ত হয় এবং এটির উন্নয়ন ঘটে। ১৮৫৪ সালে ডিসেম্বরীয় বিদ্রোহে অংশগ্রহণের জন্য অনেক রুশ অভিজাত, শিল্পী ও বুদ্ধিজীবীকে ইর্কুতস্কে নির্বাসনে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে গোটা ১৯ শতক ধরেই এটি নির্বাসিতদের গন্তব্যস্থলে পরিণত হয়। শহরটি এইসব উচ্চমার্গীয় নির্বাসিতদের সাংস্কৃতিক, বৌদ্ধিক ও সামাজিক জীবনের কেন্দ্রে পরিণত হয়। তারা শহরটিকে একটি শক্তিশালী সাংস্কৃতিক পরিচয় প্রদান করে, যেগুলি আজও শহরের হাতের কাজ করা শোভাবর্ধক নকশা সম্বলিত কাঠের বাড়িগুলিতে দর্শনীয়। এসময় শহরটিকে "সাইবেরিয়ার প্যারিস" নামে ডাকা শুরু হয়। এসময় ১৮৯৮ সালে আন্তঃসাইবেরীয় রেলপথের প্রতিষ্ঠার পরে শহরের গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। ১৯১৮-২০ সালে রুশ গৃহযুদ্ধের সময় শহরটিতে প্রচুর লড়াই হয়। সোভিয়েত যুগে এসে এখানে বর্গক্ষেত্র-সদৃশ স্থাপত্যশৈলীতে ভবন নির্মাণ করা হয়।
আধুনিক কালে এসে ইর্কুতস্ক সাইবেরিয়ার একটি প্রধান শিল্পনগরী। এখানে বিভিন্ন ধরনের প্রকৌশলজাত দ্রব্য উৎপাদন করা হয়। এখানে রেলপথ, বিমান নির্মাণ ও মেরামতি, জাহাজ ও মোটরযান মেরামতির কারখানা আছে। মাইকা প্রক্রিয়াজাতকরণ ও ভোগ্যপণ্য শিল্পোৎপাদনও উল্লেখ্য। শহরের আওতায় আঙ্গারা নদীর উপরে ইর্কুতস্ক জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি রয়েছে। শহর থেকে ৭২ কিলোমিটার দূরে বৈকাল হ্রদের দক্ষিণ-পশ্চিম তীর অবস্থিত। হ্রদটি ১৯৯৬ সাল থেকে একটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান। বৃক্ষসারিশোভিত রাস্তা, ১৯শ শতকে নির্মিত কাঠের বাড়ি ও নদী ঘেঁষে আকর্ষণীয় বেড়িবাঁধ ইর্কুতস্কের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য। সম্প্রতি ১৩০ কভার্তাল নামের একটি পর্যটন এলাকা সৃষ্টি করা হয়েছে, যেটি সাইবেরিয়ার ঐতিহ্যবাহী কাঠের স্থাপত্যে তৈরি বাড়িঘর দিয়ে পূর্ণ। এখানে একটি আধুনিক বিপণীবিতান বা শপিং মলও আছে। শহরকে সাইবেরীয় তৈগা অরণ্যাবৃত পাহাড়গুলি ঘিরে রেখেছে।
শহরটি পূর্ব সাইবেরিয়ার তথা রুশ দূর প্রাচ্যের প্রশাসনিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। শহরে অনেকগুলি শিক্ষণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট আছে, যার মধ্যে ১৯১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ইর্কুতস্ক রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় ও রুশ বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির সাইবেরীয় শাখাটি উল্লেখযোগ্য।
আন্তঃসাইবেরীয় মহাসড়কপথ (কেন্দ্রীয় এম৫৩ ও এম৫৫ মহাসড়ক) ও আন্তঃসাইবেরীয় রেলপথ ইর্কুতস্ক নগরীকে রাশিয়ার অন্যান্য অঞ্চল ও মঙ্গোলিয়ার সাথে সংযুক্ত করেছে।