ওরিয়েন্টালিজম (গ্রন্থ)
এডওয়ার্ড ডাব্লিউ. সাঈদ এর ১৯৭৪এর বই / From Wikipedia, the free encyclopedia
ওরিয়েন্টালিজম (Orientalism) হচ্ছে এডওয়ার্ড ডব্লিউ. সাঈদের লেখা ১৯৭৮ সালের একটি গ্রন্থ, যেখানে লেখক প্রাচ্যতত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করেছেন। এখানে প্রাচ্যতত্ত্ব বলতে লেখক বুঝিয়েছেন সেই মনোভাবকে যার দ্বারা পাশ্চাত্য প্রাচ্যকে, প্রাচ্যের সমাজকে ও প্রাচ্যের জনগণকে দেখে থাকে। এখানে প্রাচ্য বলতে লেখক এশিয়া, উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যকে বুঝিয়েছেন। সাঈদ এর মতে, প্রাচ্যবাদ এর মনোভাবটি শক্তভাবে সাম্রাজ্যবাদী সমাজগুলোর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত যেগুলো সাম্রাজ্যবাদকে তৈরি করেছে, এবং যারা রাজনৈতিকভাবে ও ক্ষমতা-সম্পর্কিতভাবে প্রাচ্যবাদ এর কাজ করে চলেছে বা টিকিয়ে রাখছে।[1]
সাঈদ এর মতে, মধ্যপ্রাচ্যে শাসক আরব সম্ভ্রান্তদের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক চর্চা নির্দেশ করছে যে তারা সাম্রাজ্যবাদের অধস্তন শাসনকর্তা হিসেবে কাজ করছে, এবং তারা ফরাসী, ইংরেজ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রাচ্যবাদীদের দ্বারা তৈরিকৃত আরব সংস্কৃতিকে ধারণ ও বহন করছে। উদাহরণ হিসেবে জোসেফ কনরাড এর ঐপনিবেশিক সাহিত্যের বিশ্লেষণ এর কথা বলা যেতে পারে, যেখানে একটি জনগোষ্ঠী, একটি সময় ও একটি স্থানকে একটি বিদেশী অঞ্চলের ঘটনা ও অভিযান এর দৃষ্টিভঙ্গিতে তুলে ধরেছেন।[2]
এই গ্রন্থ উল্লিখিত প্রাচ্যতত্ত্বে উত্তর-আধুনিকতাবাদের প্রয়োগ সাংস্কৃতিক সমালোচনা নামে একটি সাহিতিক তত্ত্বের বিকাশ ঘটেছে। এছাড়া গ্রন্থটিতে মধ্যপ্রাচ্য পাঠ নামে একটি অধ্যায় রয়েছে যেখানে লেখক মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ে শিক্ষায়তনিক গণ তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক তদন্ত, পরীক্ষণ, বর্ণনা ও ব্যাখ্যা করেন।[3] সাঈদের প্রাচ্যবাদ নিয়ে কাজটি উত্তর-উপনিবেশী সাংস্কৃতিক পাঠ এর ভিত্তি তৈরি করেছে, যেখানে প্রাচ্যবাদ নিয়ে ও বিভিন্ন দেশের উত্তর-উপনিবেশী সময়ের ইতিহাস নিয়ে পরীক্ষা করা হয়।[4]
একজন গণ বুদ্ধিজীবী হিসেবে এডওয়ার্ড সাঈদ এরিয়া স্টাডিস এর ঐতিহাসিক ও পণ্ডিতদের সাথে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। এদের মধ্যে রয়েছেন বারনার্ড লুইস, যিনি সাঈদ এর প্রাচ্যতত্ত্ব নিয়ে গবেষণামূলক প্রবন্ধটিকে "পাশ্চাত্য-বিরোধী" বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।[5] ওরিয়েন্টালিজম এর পরের সংস্করণগুলোতে সাঈদ একটি "আফটারওয়ার্ড" (১৯৯৫)[6] এবং একটি "মুখবন্ধ" (২০০৩)[7] যোগ করেন, যেখানে তিনি সাংস্কৃতিক সমালোচনা হিসেবে তার লেখা ও বিষয়বস্তুর সমালোচনা নিয়ে লেখেন।