বেথলেহেমের তারা
From Wikipedia, the free encyclopedia
খিস্ট ধর্মের বিশ্বাসমতে বেথলেহেমের তারা (ইংরেজি ভাষায়: Star of Bethlehem) বা ক্রিসমাস তারা[1] যীশু খ্রিস্টের জন্ম সম্পর্কে বাইবেলে বর্ণীত ম্যাজাই বা পণ্ডিত ব্যক্তিদের জানিয়েছিল এবং এই তারাকে অনুসরণ করেই তারা বেথলেহেম শহরে পৌঁছেছিলেন। ম্যাথিউয়ের গসপেলে এই তারার কথা আছে, যেখানে বর্ণীত আছে প্রাচ্যের কয়েকজন পণ্ডিত এই তারা দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে জেরুজালেম যান।[2] সেখানে তারা জুডিয়া সম্রাজ্যের রাজা হেরোদের সাথে দেখা করে জিজ্ঞেস করেন ইহুদিদের রাজার জন্ম কোথায় হয়েছে। হেরোদ মিকাহ-এর বইয়ের একটি বাণীকে ভবিষ্যদ্বাণী হিসেবে বিবেচনা করে তাদেরকে জেরুজালেমের কাছে একটি ছোট্ট গ্রাম বেথলেহেমের পথ দেখিয়ে দেন। তারা ম্যাজাইদেরকে যীশুর বাড়িতে পৌঁছে দেয় এবং সেখানে তারা শিশু যীশুর উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করে এবং তাকে উপহার সামগ্রী দেয়। এরপর দৈব বাণীর মাধ্যমে পণ্ডিতরা জানতে পারেন যে তাদের হেরোদের কাছে ফিরে যাওয়া ঠিক হবে না, অগত্য তারা ভিন্ন একটি পথ অনুসরণ করে নিজের দেশে ফিরে যান।[3]
অনেক খ্রিস্টান তারাটিকে যীশু বা মেসাইয়া-র জন্ম নির্দেশকারী একটি অলৌকিক ঘটনা হিসেবে দেখেন। অনেক ধর্মবেত্তার মতে এই তারা একটি ভবিষ্যদ্বাণীকে সত্য প্রমাণ করেছে।[4] অন্যদিকে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা তারাটির ভৌত বা প্রাকৃতিক কারণ নির্ণয়ের অনেক চেষ্টা করেছেন। তারা বৃহস্পতি এবং শনি গ্রহের সংযোগ, ধূমকেতু বা অতিনবতারা ইত্যাদির মাধ্যমে এটি ব্যাখ্যার চেষ্টা করেছেন।[5][6]
বিখ্যাত অনেক পণ্ডিত আবার ঘটনাটির ঐতিহাসিক সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের দাবী হচ্ছে গসপেলের লেখক ম্যাথিউ ধর্মের খাতিরে এই গল্প উদ্ভাবন করেছেন।[7]
ক্রিসমাস মৌসুমে নভোথিয়েটারে এই তারা দেখানোটা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।[8] যদিও বাইবেলের ভাষ্য অনুযায়ী যীশুর জন্মের অন্তত কয়েক মাস পর পণ্ডিতরা তাকে দেখতে এসেছিলেন।[9] এই সাক্ষাতের ঘটনাটি এপিফ্যানি নামক একটি আলাদা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে খ্রিস্টানরা উদ্যাপন করে।[10] ল্যুকের গসপেলের গবাদি-পশু সংক্রান্ত দৃশ্যটি উপস্থাপন করতে গিয়ে অনেকে তারাটির কথা বলেন যদিও গসপেলটিতে তারা এবং পণ্ডিতদের ভ্রমণের কোন কথা নেই।