মুহাম্মদ ইকবাল
অবিভক্ত ভারতবর্ষের মুসলিম কবি, দার্শনিক এবং রাজনীতিবিদ / From Wikipedia, the free encyclopedia
মুহাম্মদ ইকবাল বা আল্লামা/স্যার মুহাম্মদ ইকবাল (/ˈɪkbɑːl/; উর্দু: محمد اِقبال; ৯ নভেম্বর, ১৮৭৭ – ২১ এপ্রিল, ১৯৩৮) ছিলেন অবিভক্ত ভারতবর্ষের একজন মুসলিম কবি, দার্শনিক, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ এবং ব্যারিস্টার।[1] তার ফার্সি ও উর্দু কবিতাকে[2] আধুনিক যুগের ফার্সি এবং উর্দু সাহিত্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। [2][3] তাঁকে পাকিস্তানের আধ্যাত্মিক জনক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়।[4] তিনি নিজের ধর্মীয় ও ইসলামী রাজনৈতিক দর্শনের জন্যও মুসলিম বিশ্বে বিশেষভাবে সমাদৃত ছিলেন। মুহাম্মাদ ইকবালকে আল্লামা ইকবাল হিসেবে অধিক সম্বোধন করা হয়। আল্লামা ইকবাল পাকিস্তানের জাতীয় কবি হিসেবে সমাদৃত।[5]
মুহাম্মদ ইকবাল محمد اِقبال | |
---|---|
জন্ম | গাজী মুহাম্মদ ইকবাল (১৮৭৭-১১-০৯)৯ নভেম্বর ১৮৭৭ |
মৃত্যু | ২১ এপ্রিল ১৯৩৮(1938-04-21) (বয়স ৬০) |
জাতীয়তা | ব্রিটিশ ভারতীয়, (মূলত পাকিস্তানি) |
যুগ | ২০ শতকের দর্শন |
অঞ্চল | ইসলামি দর্শন |
ধারা | শরীয়াহ |
প্রধান আগ্রহ | কবিতা, ইতিহাস, অধিবিদ্যা, ইসলাম |
উল্লেখযোগ্য অবদান | দ্বি-জাতি তত্ত্ব; খুদি |
ভাবগুরু | |
ভাবশিষ্য | |
ইকবাল ভারতীয়, পাকিস্তানি, বাংলাদেশী, ইরানীয় ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সাহিত্যের বিশিষ্ট কবি হিসাবে প্রশংসিত।[6][7][8] যদিও ইকবাল বিশিষ্ট কবি হিসাবে সর্বাধিক পরিচিত, তিনি "আধুনিক সময়ের মুসলিম দার্শনিক চিন্তাবিদ" হিসাবেও অত্যন্ত প্রশংসিত। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ আসরার-ই-খুদী ১৯১৫ সালে পারস্য ভাষায় প্রকাশিত হয়েছিল এবং কবিতার অন্যান্য গ্রন্থগুলিতে রুমুজ-ই-বেখুদী ,পয়গাম-ই -মাশরিক এবং জুবুর-ই -আজাম। এর মধ্যে তার বিখ্যাত উর্দু রচনাগুলি হ'ল বাং -ই -দারা ,বাল -ই -জিবরাইল এবং আরমাঘান -ই -হিজাজ ।[9]
১৯২২ সালের নিউ ইয়ার্স অনার্সে, রাজা পঞ্চম জর্জ তাকে নাইট ব্যাচেলর এ ভূষিত করে।[10][11] দক্ষিণ এশিয়া ও উর্দু-ভাষী বিশ্বের বেশিরভাগ অঞ্চলে ইকবালকে শায়র-ই-মাশরিক' (উর্দু: شاعر مشرق, প্রাচ্যের কবি) হিসাবে বিবেচনা করা হয়।[12][13] তাকে মুফাক্কির-ই-পাকিস্তান (উর্দু: مفکر پاکستان,পাকিস্তানের চিন্তাবিদ ), মুসোয়াওয়ার-ই-পাকিস্তান (উর্দু: مصور پاکستان, "'পাকিস্তানের শিল্পী") এবং হাকিম-উল-উম্মাত (উর্দু: حکیم الامت, "উম্মাহর ভরসা") ইত্যাদি নামে ডাকা হয়।
তার একটি বিখ্যাত চিন্তা দর্শন হচ্ছে ভারতের মুসলমানদের জন্য স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন। এই চিন্তাই বর্তমান পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টিতে ভূমিকা রেখেছে। তার নাম মুহাম্মদ ইকবাল হলেও তিনি আল্লামা ইকবাল হিসেবেই অধিক পরিচিত। আল্লামা শব্দের অর্থ হচ্ছে শিক্ষাবিদ। তার ফার্সি সৃজনশীলতার জন্য ইরানেও তিনি ছিলেন সমধিক প্রসিদ্ধ; তিনি ইরানে ইকবাল-ই-লাহোরী নামে পরিচিত।
পাকিস্তান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে "পাকিস্তানের জাতীয় কবি" হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে।[8] তার জন্মদিন ইয়াম-ই ওয়েলাদাত-ই মুআম্মাদ ইকবাল (উর্দু: یوم ولادت محمد اقبال, বা ইকবাল দিবস, পাকিস্তানের সরকারী ছুটির দিন হিসাবে পালন করা হয়।[14]
ইকবালের বাড়ি এখনও শিয়ালকোটে অবস্থিত এবং এটি ইকবালের মঞ্জিল হিসাবে স্বীকৃত এবং দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত। তার অন্য বাড়ি জাভেদ মঞ্জিল লাহোরে অবস্থিত যেখানে তিনি তার জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন এবং সেখানেই মারা যান। বর্তমানে এটি জাদুঘর যা পাকিস্তানের পাঞ্জাবের লাহোর রেলস্টেশনের কাছে আল্লামা ইকবাল রোডে অবস্থিত।[15]