যীশুর স্বর্গারোহণ
From Wikipedia, the free encyclopedia
যীশুর স্বর্গারোহণ হল একটি খ্রিস্টান ধারণা। নূতন নিয়মে প্রাপ্ত এই ধারণা অনুসারে, যিশুর পুনরুজ্জীবনের ৪০ দিন পর তিনি তার শিষ্যদের উপস্থিতিতে সশরীরে স্বর্গে গমন করেন। বাইবেলের উপাখ্যান অনুসারে, এক দেবদূত প্রত্যক্ষদর্শী শিষ্যদের জানান, যেমনভাবে যিশু স্বর্গে আরোহণ করলেন, ঠিক তেমনভাবেই তিনি দ্বিতিয়বার পৃথিবীতে নেমে আসবেন।[1]
প্রামাণ্য সুসমাচারগুলিতে যিশুর স্বর্গারোহণের দুটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা পাওয়া যায়: লুক-লিখিত সুসমাচার (২৪: ৫-৫৩) ও মার্ক-লিখিত সুসমাচার (১৬: ১৯)। ‘প্রভু যিশুর প্রেরিত শিষ্যদের কার্যবিবরণী’ পুস্তকে (১: ৯-১১) যিশুর স্বর্গারোহণের একটি অধিকতর বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায়।
নাইসিন ধর্মমত ও প্রেরিতদের ধর্মমতে যিশুর স্বর্গারোহণের কথা বলা হয়েছে। এই স্বর্গারোহণের তাৎপর্য এই যে, এই মতবাদের মাধ্যমে যিশুর মানবতার স্বর্গে আরোহণের উপর গুরুত্ব আরোপিত হয়েছে।[2] ইস্টারের ৪০ দিন পর (এই দিনটি বৃহস্পতিবার) স্বর্গারোহণ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এটি খ্রিস্টান বর্ষপঞ্জির অন্যতম প্রধান উৎসব।[3] আনুমানিক খ্রিস্টীয় ৪র্থ শতাব্দীর শেষার্ধে চালু হওয়া এই উৎসব অত্যন্ত জনপ্রিয়।[3] যিশুর স্বর্গারোহন সুসমাচারে উল্লিখিত যিশুর জীবনের প্রধান পাঁচটি উল্লেখযোগ্য ঘটনার অন্যতম (অন্যগুলি হল দীক্ষা, রূপান্তর, ক্রুশারোহণ ও পুনরুজ্জীবন)।[4][5]
৬ষ্ঠ শতাব্দীর মধ্যে খ্রিস্টান শিল্পকলায় স্বর্গারোহণের চিত্র অঙ্কিত হতে শুরু হয়। ৯ম শতাব্দী থেকে গির্জার চূড়ায় স্বর্গারোহণের দৃশ্য প্রদর্শিত হতে শুরু করে। [6] অনেক স্বর্গারোহণের দৃশ্যে দুটি অংশ থাকে: একটি উপরের (স্বর্গীয়) ও একটি নিচের (পার্থিব) অংশ। স্বর্গারোহণের সময় যিশু ডান হাতে পৃথিবীতে তার শিষ্যদের আশীর্বাদ করছেন, এমন দৃশ্যও দেখা যায়। এই দৃশ্যের তাৎপর্য, যিশু সমগ্র চার্চকে আশীর্বাদ করছেন।[7]