রুবেলা
ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট রোগ / From Wikipedia, the free encyclopedia
রুবেলা, জার্মান হাম বা তিন দিনের হাম নামে পরিচিত,[1] রুবেলা ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট একটি রোগ।[2] এই রোগ প্রায়ই মৃদু এবং আক্রান্ত রোগীদের অর্ধেকই অসুস্থতা বুঝতে পারে না।[3] লালচে ফুসকুড়ি সংক্রমণের প্রায় দুই সপ্তাহ পর শুরু হয়ে তিন দিনের জন্য স্থায়ী হতে পারে। এটি সাধারণত মুখের ওপর শুরু হয় এবং শরীরের বাকি অংশে ছড়িয়ে পড়ে। হামের ফুসকুড়ির মত উজ্জ্বল নয় এবং কখনও কখনও চুলকানি হয়। অনেক ক্ষেত্রেই লসিকা গ্রন্থি ফুলে কয়েক সপ্তাহ স্থায়ী হতে পারে [4][5]। বড়দের অস্থিসন্ধিতে ব্যথা সচরাচর হয়। জটিলতাগুলোর মধ্যে রক্তক্ষরণ সমস্যা, অণ্ডকোষ ফোলা, এবং স্নায়ু প্রদাহ অন্তর্ভুক্ত। গর্ভাবস্থার পর্যায়ে প্রাথমিক পর্যায়ে সংক্রমণ থেকে জন্মগত রুবেলা সিনড্রোম (সিআরএস) অথবা গর্ভপাত হতে পারে। সিআরএস এর প্রধান উপসর্গ, হৃৎপিণ্ড ও মস্তিষ্কের সমস্যা, কানের সমস্যা যেমন- বধিরতা, চোখের সমস্যা যেমন- ছানি অন্তর্ভুক্ত। সমস্যার গর্ভাবস্থার ২০ সপ্তাহের পর বিরল।
রুবেলা সাধারণত সংক্রমিত মানুষের কাশির মাধ্যমে বায়ুতে ছড়িয়ে পড়ে।[6] ফুসকুড়ি ওঠার এক সপ্তাহ আগে ও এক সপ্তাহ পর পর্যন্ত আক্রান্ত ব্যক্তি রোগ ছড়াতে পারে। সিআরএস আক্রান্ত শিশুরা এক বছরের বেশি সময় পর্যন্ত ভাইরাস রোগ ছড়াতে পারে। শুধু মানুষই আক্রান্ত হয়। পোকামাকড়ের মাধ্যমে রোগ ছড়ায় না। একবার উদ্ধার, মানুষ ভবিষ্যতে সংক্রমণ অনাক্রম্য হয়। পরীক্ষা করে অনাক্রম্যতা যাচাই করা যায়। রোগ নির্ণয় রক্ত, গলা, বা প্রস্রাবে ভাইরাস শনাক্ত করে নিশ্চিত করা হয়। রক্তে অ্যান্টিবডি পরীক্ষা সহায়ক হতে পারে।
রুবেলা একটি প্রতিরোধযোগ্য যা একটিমাত্র টিকার মাধ্যমে ৯৫% প্রতিরোধযোগ। প্রায়ই এটা হাম এবং মাম্পস ভ্যাকসিনের সাথে একযোগে দেওয়া হয় যা এমএমআর টিকা হিসাবে পরিচিত। টিকাদানের হার জনসংখ্যার ৮০%-এর কম হলে গর্ভধারণের আগে নারী অনাক্রম্যতা অর্জন করতে পারে না এবং এই সমস্যা বাড়তে পারে। একবার আক্রান্ত হলে কোন নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। রুবেলা বিশ্বের অনেক অঞ্চলে একটি সাধারণ রোগ। প্রতি বছর জন্মগত রুবেলা সিনড্রোম হয় ১০০,০০০ শিশুর। রোগের হার টিকা দেয়ার ফলে অনেক এলাকায় কমে গেছে। বিশ্বব্যাপী রোগটি নির্মূল করার প্রচেষ্টা অব্যাহত। ২০১৫ সালের এপ্রিলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দুই আমেরিকাকে রুবেলা সংক্রমণ-মুক্ত ঘোষণা করে[7][8]। "রুবেলা" ল্যাটিন শব্দ, যার অর্থ সামান্য লাল। এটা প্রথম ১৮১৪ সালে একজন জার্মান চিকিৎসক একটি পৃথক রোগ হিসেবে বর্ণনা করেন বলেই একে "জার্মান হাম" হিসেবে অভিহিত করা হয়।