সমকামিতার জীববৈজ্ঞানিক কারণ
From Wikipedia, the free encyclopedia
সমকামিতার জীববৈজ্ঞানিক কারণ সম্বন্ধে বিজ্ঞানী ও সাধারণ মানুষ উভয়ের নিকট সমভাবে কৌতূহল থাকলেও এখনো পর্যন্ত সমকামপ্রবণতার সুনিশ্চিত জীববৈজ্ঞানিক কার্যকারণ সূত্র আবিষ্কৃত হয় নি। সমকামিতার সাথে বিজ্ঞান বিশেষ করে জীববৈজ্ঞানিক (প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে জীববিজ্ঞান ও যৌন অভিমুখিতা বলা হয়) সম্পর্ক আছে কী নেই, থাকলে কতটুকু আছে - তা নিয়ে গবেষণা চলমান রয়েছে। একজন মানুষ কেন সমলিঙ্গের প্রতি যৌন আকর্ষণ বোধ করে তার কোনো একক নির্ণায়ক (জিন, হরমোন ইত্যাদি) অদ্যাবধি কোনো গবেষণার মাধ্যমে চিহ্নিত করা সম্ভব হয় নি। তবে বিজ্ঞানীদের ধারণা সমলিঙ্গের প্রতি যৌনাকর্ষণের পেছনে সামাজিক নির্ণায়ক (social factor) ও জীববৈজ্ঞানিক উভয়বিধ কারণ যুগপৎ সক্রিয়। মানুষের স্বভাব গঠনে ক্রিয়াশীল জিন ও হরমোন এবং সামাজিক নির্ণায়কসমূহ (social factor) মিশ্রিতভাবে এই যৌন অভিমুখিতা নির্ধারণ করে থাকে বলে বিজ্ঞানীগণ মত দিয়েছেন।[1][2][3]
একটি অনুকল্প মতে, অন্ততপক্ষে পুরুষ সমকামী না বিষমকামী হবে তা নির্ধারণ জন্মের পরে পরিবেশ করতে পারে না, করার সম্ভাবনাও দুর্বল।[4] যৌন অভিমুখিতা ব্যাখার ক্ষেত্রে জীববিজ্ঞানের তত্ত্বসমূহ বেশ জনপ্রিয়।[1] এতে বংশানুক্রমিক বিষয়ের (genetic factor) জটিল অন্তক্রিয়া সহ মস্তিষ্ক এবং মাতৃগর্ভকালীন প্রাথমিক জীবনের পরিবেশ (early uterine environment) নিয়েও আলোচনা করা হয়।[5] এই বিষয়গুলো জিন, জন্মপূর্বে মার্তৃগর্ভে হরমোন এবং মস্তিষ্কের গঠনের সাথে সম্পর্কযুক্ত এবং ব্যক্তির বিষমকামী, সমকামী, উভকামী ও নিষ্কামী যৌন-অভিমুখিতা তৈরিতে ভূমিকা রাখতে পারে বলে ধারণা করা হয়। বিভিন্ন জীবের মধ্যে বিষমকামিতা দেখা যাওয়ার কারণ বিবর্তনীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সহজে ব্যাখ্যা করা সম্ভব। কারণ যৌন প্রজননের ফলে জীব বংশ বিস্তারের মাধ্যমে তার বংশের ধারা সহজে বজায় রাখতে পারে।[6][7] সমকামিতার ক্ষেত্রে বংশের ধারা যেহেতু যৌন প্রজননের মাধ্যমে রক্ষিত হয় না, তারপরেও যুগ যুগ ধরে সমকামিতা বিভিন্ন জীবের মধ্যে দেখা যাওয়ার অন্তর্নিহিত কারণ অন্যান্য বিষয়ের উপর নির্ভরশীল। যেমন আত্মীয়দের সহায়তা করা (কিন সিলেকশন) এবং শারীরিকভাবে সক্ষম (ইনক্লুসিভ ফিটনেস) বা এমন জিন যা ভালো ও খারাপ দুই রকম প্রভাব ফেলে (অ্যান্টাগনিস্টিক প্লিওট্রপি) এরকম জিনের বৈশিষ্ট্য প্রকাশের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে সমকামিতা জীবের মধ্যে দেখা যায় বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন।