ইন্দিরা গান্ধী
ভারতের তৃতীয় ও একমাত্র নারী প্রধানমন্ত্রী / From Wikipedia, the free encyclopedia
ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী গান্ধী (হিন্দুস্তানি: [ˈɪnd̪ɪɾɑː ˈɡɑːnd̪ʰi] (শুনুনⓘ); বিবাহের পূর্বে: নেহেরু; ১৯ নভেম্বর, ১৯১৭ – ৩১ অক্টোবর, ১৯৮৪) ছিলেন একজন ভারতীয় রাজনীতিবিদ, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রী[2] এবং ভারতের তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী। ইন্দিরা গান্ধীই হলেন একমাত্র মহিলা যিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। পারিবারিক পরিচয়ে ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর কন্যা ইন্দিরা ১৯৬৬ সালের জানুয়ারি থেকে ১৯৭৭ সালের মার্চ এবং পুনরায় ১৯৮০ সালের জানুয়ারি থেকে ১৯৮৪ সালের অক্টোবরে নিহত হওয়ার দিন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন ছিলেন। তিনিই ভারতে দ্বিতীয় দীর্ঘতম মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন (জওহরলাল নেহেরুর পরে)।[3]
[[]] ইন্দিরা গান্ধী | |
---|---|
উত্তরসূরী | রাজীব গান্ধী |
কাজের মেয়াদ ২৪ জানুয়ারি, ১৯৬৬ – ২৪ মার্চ, ১৯৭৭ | |
রাষ্ট্রপতি | সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন জাকির হুসেইন ভি. ভি. গিরি ফকরুদ্দিন আলি আহমেদ |
ডেপুটি | মোরারজী দেসাই |
পূর্বসূরী | গুলজারিলাল নন্দা (অস্থায়ী) |
উত্তরসূরী | মোরারজী দেসাই |
বিদেশমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ৯ মার্চ, ১৯৮৪ – ৩১ অক্টোবর, ১৯৮৪ | |
পূর্বসূরী | পি. ভি. নরসিংহ রাও |
উত্তরসূরী | রাজীব গান্ধী |
কাজের মেয়াদ ২২ অগস্ট, ১৯৬৭ – ১৪ মার্চ, ১৯৬৯ | |
পূর্বসূরী | এম. সি. চাগলা |
উত্তরসূরী | দীনেশ সিং |
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ১৪ জানুয়ারি, ১৯৮০ – ১৫ জানুয়ারি, ১৯৮২ | |
পূর্বসূরী | চিদম্বরম সুব্রহ্মণ্যম |
উত্তরসূরী | আর. বেঙ্কটরমণ |
কাজের মেয়াদ ৩০ নভেম্বর, ১৯৭৫ – ২০ ডিসেম্বর, ১৯৭৫ | |
পূর্বসূরী | স্বর্ণ সিং |
উত্তরসূরী | বংশী লাল |
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ২৭ জুন, ১৯৭০ – ৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৩ | |
পূর্বসূরী | যশবন্তরাও চবন |
উত্তরসূরী | উমাশঙ্কর দীক্ষিত |
অর্থমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ১৭ জুলাই, ১৯৬৯ – ২৭ জুন, ১৯৭০ | |
পূর্বসূরী | মোরারজী দেসাই |
উত্তরসূরী | যশবন্তরাও চবন |
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ৯ জুন, ১৯৬৪ – ২৪ জানুয়ারি, ১৯৬৬ | |
প্রধানমন্ত্রী | লাল বাহাদুর শাস্ত্রী |
পূর্বসূরী | সত্যনারায়ণ সিনহা |
উত্তরসূরী | কোদারদাস কালিদাস শাহ |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী নেহেরু (১৯১৭-১১-১৯)১৯ নভেম্বর ১৯১৭ এলাহাবাদ, আগ্রা ও অবধের যুক্তপ্রদেশ, ব্রিটিশ ভারত (অধুনা প্রয়াগরাজ, উত্তরপ্রদেশ, ভারত) |
মৃত্যু | ৩১ অক্টোবর ১৯৮৪(1984-10-31) (বয়স ৬৬) নতুন দিল্লি, ভারত |
স্মারক স্থল | শক্তিস্থল |
মৃত্যুর কারণ | নিহত (ব্যালিস্টিক ট্রমা) |
রাজনৈতিক দল | ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস |
দাম্পত্য সঙ্গী | ফিরোজ গান্ধী (বি. ১৯৪২; মৃ. ১৯৬০) |
সন্তান | রাজীব গান্ধী সঞ্জয় গান্ধী |
পিতামাতা | জওহরলাল নেহেরু (পিতা) কমলা নেহেরু (মাতা) |
আত্মীয়স্বজন | নেহেরু–গান্ধী পরিবার দেখুন |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (পড়াশোনা অসম্পূর্ণ)[1] সমারভিল কলেজ, অক্সফোর্ড (পড়াশোনা অসম্পূর্ণ)[1] |
পুরস্কার | ভারতরত্ন (১৯৭১) বাংলাদেশ স্বাধীনতা সম্মাননা (২০১১) |
স্বাক্ষর | |
ডাকনাম | নিবন্ধ দেখুন |
১৯৪৭ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত জওহরলাল নেহেরুর প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়কালে ইন্দিরা গান্ধীকে তাঁর প্রধান সহকারী মনে করা হত। তিনি নেহেরুর সঙ্গে বহুবার বিদেশ সফরেও যান।[4] ১৯৫৯ সালে তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভানেত্রী নির্বাচিত হন। ১৯৬৪ সালে নেহেরুর মৃত্যুর পর তাঁকে ভারতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার সদস্যপদ প্রদান করা হয় এবং তিনি লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর ক্যাবিনেটে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীর পদে শপথ গ্রহণ করেন।[5] লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর মৃত্যুর পরে ১৯৬৬ সালের গোড়ার দিকে কংগ্রেসের সংসদীয় নেতা নির্বাচনে ইন্দিরা তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী মোরারজী দেসাইকে পরাজিত করেন এবং ভারতের তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইন্দিরা গান্ধী পরিচিত ছিলেন রাজনীতির ক্ষেত্রে তাঁর আপোসহীন মনোভাব এবং ক্ষমতার অভূতপূর্ব কেন্দ্রীকরণের জন্য। পূর্ব পাকিস্তানে স্বাধীনতা আন্দোলন ও স্বাধীনতার যুদ্ধের সমর্থনে তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বাংলাদেশকে সহয়তা করেন। এই যুদ্ধে বাংলাদেশ জয়লাভ করে, সেই সঙ্গে ভারতের প্রভাব এতটাই বৃদ্ধি পায় যে এই দেশটি দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র আঞ্চলিক শক্তি হয়ে ওঠে। বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপ ও বিপ্লবের প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে ইন্দিরা গান্ধী ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিলেন। এই সময় মৌলিক নাগরিক স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছিল। জরুরি অবস্থার সময় বহু স্থানে গণহত্যারও ঘটনা ঘটে।[6] ১৯৮০ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি আবার ক্ষমতায় ফিরে আসেন। স্বর্ণমন্দিরে অপারেশন ব্লু স্টার সামরিক অভিযানের নির্দেশ দেওয়ার পরে ১৯৮৪ সালের ৩১ অক্টোবর ইন্দিরা গান্ধী তার নিজের শিখ জাতীয়তাবাদী দেহরক্ষীদের গুলিতে নিহত হন।
১৯৯৯ সালে বিবিসি আয়োজিত একটি অনলাইন সমীক্ষায় ইন্দিরা গান্ধীকে ‘সহস্রাব্দের নারী’ আখ্যা প্রদান করা হয়।[7] ২০২০ সালে ইন্দিরা গান্ধীকে টাইম পত্রিকা কর্তৃক বিগত শতাব্দীর সংজ্ঞা-নির্ধারণকারী ১০০ শক্তিশালী নারীর তালিকাভুক্ত করা হয়।[8][9]