ডপলার ক্রিয়া
From Wikipedia, the free encyclopedia
ডপলার প্রভাব বা ডপলার শিফট (অথবা শুধু ডপলার)[1][2] হল তরঙ্গের উৎসের সাপেক্ষে একটি পর্যবেক্ষকের গতিশীলতার সাথে সম্পর্কিত একটি তরঙ্গের কম্পাঙ্কের আপাত পরিবর্তন।[3] অস্ট্রিয়ান পদার্থবিদ ক্রিশ্চিয়ান ডপলারের নামানুসারে এই ক্রিয়ার নামকরণ করা হয়েছে। তিনি ১৮৪২ সালে ঘটনাটি বর্ণনা করেছিলেন।
ডপলার ক্রিয়ার একটি সাধারণ উদাহরণ হল হর্ন বাজানো একটি গাড়ির কাছে আসা এবং পর্যবেক্ষকের কাছ থেকে সরে যাবার সময় পিচের পরিবর্তন। এক্ষেত্রে নির্গত কম্পাঙ্কের তুলনায় প্রাপ্ত কম্পাঙ্ক কাছে আসার সময় বেশি, পাশ কাটিয়ে যাওয়ার মুহূর্তে একই রকম এবং প্রত্যাবর্তনের কম বলে মনে হয়।[4]
ডপলার প্রভাবের কারণ হল যে তরঙ্গের উৎস পর্যবেক্ষকের দিকে অগ্রসর হবার সময় প্রতিটি ধারাবাহিক তরঙ্গ শীর্ষ আগের তরঙ্গের শীর্ষের চেয়ে পর্যবেক্ষকের কাছাকাছি অবস্থান থেকে নির্গত হয়।[4][5] তাই প্রতিটি তরঙ্গ পূর্ববর্তী তরঙ্গের তুলনায় পর্যবেক্ষকের কাছে পৌঁছাতে কিছুটা কম সময় নেয়। ফলে পর্যবেক্ষকের কাছে ক্রমাগত তরঙ্গ শীর্ষের আগমনের মধ্যে সময় কমে যায় ও ফলে কম্পাঙ্ক বৃদ্ধি পায়। এতে ভ্রমণ করার সময় পাশাপাশি অবস্থিত তরঙ্গের মধ্যে দূরত্ব হ্রাস পায়।
বিপরীতভাবে যদি তরঙ্গের উৎস পর্যবেক্ষক থেকে দূরে সরে যায়, প্রতিটি তরঙ্গ পূর্ববর্তী তরঙ্গের চেয়ে পর্যবেক্ষক থেকে দূরের অবস্থান থেকে নির্গত হয়। তাই ধারাবাহিক তরঙ্গের মধ্যে সময় বৃদ্ধি পায় ও কম্পাঙ্ক হ্রাস করে। ফলে ভ্রমণ করার সময় পাশাপাশি অবস্থিত তরঙ্গের মধ্যে দূরত্ব বৃদ্ধি পায়।
যে তরঙ্গগুলি একটি মাধ্যমে সঞ্চালিত হয়, যেমন শব্দ তরঙ্গের জন্য, পর্যবেক্ষকের বেগ এবং উৎসের বেগ সেই মাধ্যমের সাথে আপেক্ষিক হয়, যেখানে তরঙ্গগুলি প্রেরণ করা হয়।[3] মোট ডপলার প্রভাব তাই উৎসের গতি, পর্যবেক্ষকের গতি, মাধ্যমের গতি বা এর যেকোন সংমিশ্রণের ফলে হতে পারে। ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভ বা মহাকর্ষীয় তরঙ্গের মতো ভ্যাকুয়ামে সঞ্চালিত তরঙ্গগুলির জন্য শুধুমাত্র পর্যবেক্ষক এবং উৎসের মধ্যে বেগের পার্থক্য বিবেচনা করা প্রয়োজন। যদি এই আপেক্ষিক বেগ আলোর বেগের তুলনায় নগণ্য না হয় তবে আরও জটিল আপেক্ষিক ডপলার প্রভাব দেখা দেয়।