অস্ট্রিয়া
মধ্য ইউরোপের যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র / From Wikipedia, the free encyclopedia
অস্ট্রিয়া (জার্মান: Österreich ও্যস্টারাইশ্, ক্রোয়েশীয় ভাষায়: Austrija আউস্ত্রিয়া, হাঙ্গেরীয় ভাষায়: Ausztria অউস্ত্রিয়, স্লোভেনীয় ভাষায: Avstrija আভ্স্ত্রিয়া) পশ্চিম ইউরোপের একটি রাষ্ট্র। স্থলবেষ্টিত এই দেশের উত্তরে জার্মানি ও চেক প্রজাতন্ত্র, পূর্বে স্লোভাকিয়া ও হাঙ্গেরি, দক্ষিণে স্লোভেনিয়া ও ইতালি, এবং পশ্চিমে সুইজারল্যান্ড ও লিশ্টেন্ষ্টাইন। অস্ট্রিয়া মূলত আল্পস পর্বতমালার উপরে অবস্থিত। দেশটির তিন-চতুর্থাংশ এলাকাই পর্বতময়।
অস্ট্রিয়া প্রজাতন্ত্র Republik Österreich | |
---|---|
জাতীয় সঙ্গীত:
| |
রাজধানী ও বৃহত্তম নগরী বা বসতি | ভিয়েনা |
সরকারি ভাষা | জার্মান |
আঞ্চলিক ভাষাসমূহ [1] |
|
নৃগোষ্ঠী (২০১১) | |
জাতীয়তাসূচক বিশেষণ | অস্ট্রিয়ান |
সরকার | ফেডারেল সংসদীয় প্রজাতন্ত্র |
• রাষ্ট্রপতি | আলেক্সান্ডার ভ্যান ডার |
• চ্যান্সেলর | সেবাস্তিয়ান কুরয |
• জাতীয় পরিষদের সভাপতি | বারবারা প্রাম্মের (এসপিও) |
আইন-সভা | সংসদ |
• উচ্চকক্ষ | ফেডারেল পরিষদ |
• নিম্নকক্ষ | জাতীয় পরিষদ |
স্বাধীনতা | |
• ডিউক | ১১৫৬ |
• সাম্রাজ্য | ১৮০৪ |
• প্রথম প্রজাতন্ত্র | ১৯১৮–১৯৩৪ |
• ফেডারেল রাজ্য | ১৯৩৪–১৯৩৮ |
• Anschluss | ১৯৩৮–১৯৪৫ |
• দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র | ১৯৪৫ থেকে |
• কার্যকরী রাজ্য চুক্তি | ২৭শে জুলাই, ১৯৫৫ |
আয়তন | |
• মোট | ৮৩,৮৫৫ কিমি২ (৩২,৩৭৭ মা২) (১১৩তম) |
• পানি (%) | ১.৭ |
জনসংখ্যা | |
• ২০১৮ আনুমানিক | 8,823,054[4] (৯৬তম) |
• এপ্রিল ২০১৬ আদমশুমারি | ৮,৭২৫,৯৩১[4] |
• ঘনত্ব | ১০৪/কিমি২ (২৬৯.৪/বর্গমাইল) (১০৬তম) |
জিডিপি (পিপিপি) | ২০১২ আনুমানিক |
• মোট | $358.916 billion[5] |
• মাথাপিছু | $৪২,৪৭৭[5] |
জিডিপি (মনোনীত) | ২০১২ আনুমানিক |
• মোট | $৩৯১.৪৬৯ বিলিয়ন[5] |
• মাথাপিছু | $৪৬,৩৩০[5] |
জিনি (২০০৭) | ২৬[6] নিম্ন |
মানব উন্নয়ন সূচক (২০১১) | ০.৮৮৫[7] অতি উচ্চ · ১৯তম |
মুদ্রা | ইউরো (€)d (EUR) |
সময় অঞ্চল | ইউটিসি+০১ (সিইটি) |
ইউটিসি+০২ (সিইডিটি) | |
গাড়ী চালনার দিক | ডানদিক |
কলিং কোড | +৪৩ |
আইএসও ৩১৬৬ কোড | AT |
ইন্টারনেট টিএলডি | .ate |
|
অস্ট্রিয়া একটি সংসদীয় গণতন্ত্র। এখানে ৯টি ফেডারেল রাজ্য রয়েছে। এটি ইউরোপের ৬টি রাষ্ট্রের অন্যতম যারা স্থায়ীভাবে নিরপেক্ষতা ঘোষণা করেছে। অস্ট্রিয়া ১৯৫৫ থেকে জাতিসংঘের এবং ১৯৯৫ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য।
অস্ট্রিয়া অতীতে হাবসবুর্গ রাজাদের অধীনস্থ একটি বিস্তৃত শক্তিশালী সাম্রাজ্যের প্রাণকেন্দ্র ছিল। ভিয়েনা ছিল সেই সাম্রাজ্যের রাজকীয় রাজধানী। ভিয়েনা এখনও বিশ্বের অন্যতম প্রধান শহর হিসেবে আদৃত। এর রাজকীয় রূপ, অসাধারণ বারোক স্থাপত্য, সঙ্গীত ও নাট্যকলা জগদ্বিখ্যাত। ভিয়েনা বর্তমানে অস্ট্রিয়ার বৃহত্তম শহর ও রাজধানী।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের (১৯১৪-১৯১৮) শেষে অস্ট্রিয়ার অধীনস্থ বহুজাতিক সাম্রাজ্যটি ভেঙে যায় এবং তার স্থানে একাধিক জাতিরাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটে। অস্ট্রিয়া নিজে একটি ক্ষুদ্র স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্রে পরিণত হয়। নতুন রাষ্ট্রগুলি বাণিজ্য বাধার সৃষ্টি করলে অস্ট্রিয়া তার প্রাক্তন বৈদেশিক বাজার এবং জ্বালানির উৎস থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। দেশটির অর্থনীতি বৈদেশিক সাহায্যের পর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। অস্ট্রিয়াতে রক্ষণশীল শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। ১৯৩০-এর দশকের অর্থনৈতিক মন্দা দেশটিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দেয়। যে সমাজতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তি ভিয়েনাকে সামাজিক গণতন্ত্রের মডেল হিসেবে গড়ে তুলেছিল, ১৯৩৪ সালে তাদের পতন ঘটে এবং ডানপন্থী স্বৈরশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৩৯ সালে নাৎসি জার্মানি অস্ট্রিয়াকে নিজেদের সাথে সংযুক্ত করে নেয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে (১৯৩৯-১৯৪৫) জার্মানির পরাজয়ের পর মিত্রশক্তি অস্ট্রিয়া দখল করে। এসময় মার্কিন ও সোভিয়েত সেনারা এখানে অবস্থান করছিল। ১৯৫৫ সালে অস্ট্রিয়া আবার স্বাধীন হয় এবং তারপর থেকে দেশটির অভাবনীয় অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটে। বর্তমানে দেশটি একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য। রপ্তানি ও পর্যটন শিল্প দেশটির আয়ের বড় উৎস। ভিয়েনার সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এবং অস্ট্রিয়ার অসাধারণ সৌন্দর্যময় পার্বত্য ভূদৃশ্যাবলীর টানে এখানে বহু পর্যটক বেড়াতে আসেন।