জটিল সংখ্যা
সংখ্যা পদ্ধতি যেখানে -১ এর বর্গমূল সংজ্ঞায়িত / From Wikipedia, the free encyclopedia
গণিতে জটিল সংখ্যা (ইংরেজি: Complex number)-কে বাস্তব সংখ্যার একটি গাণিতিক সম্প্রসারণ হিসেবে গণ্য করা হয়। কাল্পনিক একক i কে বাস্তব সংখ্যাসমূহের সাথে যুক্ত করে জটিল সংখ্যা পাওয়া যায়। i কে নিচের সমীকরণের সাহায্যে সংজ্ঞায়িত করা হয়[1]:
প্রতিটা জটিল সংখ্যাকেই a+ib আকারে লেখা যায়, যেখানে a এবং b বাস্তব সংখ্যা। a ও b-কে জটিল সংখ্যার বাস্তব অংশ এবং i-কে জটিল সংখ্যার কাল্পনিক অংশ বলা হয়।
জটিল সংখ্যাগুলি একটি ফিল্ড তৈরি করে। এই কারণে এদের উপর যোগ, বিয়োগ, গুণ ও ভাগ—এই চারটি দ্বিমিক অপারেশন প্রয়োগ করা সম্ভব। এই জটিল সংখ্যার অপারেশনগুলি বাস্তব সংখ্যার অপারেশনগুলিরই সম্প্রসারিত রূপ। তবে জটিল সংখ্যার উপর প্রয়োগ করার সময় এসব অপারেশনের আরও কিছু কার্যকর বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়। যেমন, কিছু জটিল সংখ্যাকে বর্গ করে ঋণাত্মক বাস্তব সংখ্যা পাওয়া সম্ভব।
ইতালীয় গণিতবিদ জিরোলামো কার্দানো ত্রিঘাত সমীকরণ সমাধান করতে গিয়ে প্রথম জটিল সংখ্যা আবিষ্কার করেন[2]। তিনি এগুলিকে "কাল্পনিক" অভিধা দিয়েছিলেন। সাধারণ ত্রিঘাত সমীকরণের সমাধান প্রক্রিয়ায় অনেক মধ্যবর্তী হিসেবের সময় এমন কিছু পদ চলে আসে যেগুলোতে ঋণাত্মক সংখ্যার বর্গমূল থাকে, এমনকি যখন মূল সমাধানে শুধু বাস্তব সংখ্যা থাকে তখনও। এই পর্যবেক্ষণ থেকেই বীজগণিতের মৌলিক উপপাদ্যের সৃষ্টি। এই উপপাদ্য অনুসারে জটিল সংখ্যার সাহায্যে এক বা একের বেশি মাত্রার যে কোন বহুপদী সমীকরণের সমাধান খুঁজে বের করা সম্ভব।
জটিল সংখ্যার যোগ, বিয়োগ, গুণ এবং ভাগের নিয়ম প্রথমে তৈরি করেন ইতালীয় গণিতবিদ রাফায়েল বোমবেল্লি। আইরিশ গণিতবিদ উইলিয়াম রোয়ান হ্যামিলটন জটিল সংখ্যার আরও বিমূর্ত একটি বিধিবদ্ধ রূপ দেন। তিনি জটিল সংখ্যার তত্ত্বকে চতুষ্টির তত্ত্বে উন্নীত করেন।
তড়িৎচৌম্বকত্ব, কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞান, ফলিত গণিত, বিশৃঙ্খলা তত্ত্ব ছাড়াও প্রকৌশলের বিভিন্ন ক্ষেত্রে জটিল সংখ্যার প্রচুর ব্যবহার রয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নাম থেকেও বোঝা যায় যে সেখানে এগুলিতে অন্তর্নিহিত গাণিতিক সংগঠন হিসেবে জটিল সংখ্যার ব্যবহার রয়েছে। যেমন- জটিল বিশ্লেষণ, জটিল ম্যট্রিক্স, জটিল বহুপদী এবং জটিল লি বীজগণিত।