রাশিয়ায় ইসলাম
From Wikipedia, the free encyclopedia
ইসলাম রাশিয়ার চারটি প্রধান ধর্মের মধ্যে অন্যতম। খ্রীষ্টধর্মের পর ইসলাম রাশিয়ার দ্বিতীয় সর্বাধিক স্বীকৃত ধর্ম। ইউরোপে রাশিয়ার সর্বাধিক মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে; এবং ২০১৭ সালে মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগের মতে,[3] রাশিয়ায় মুসলমানদের সংখ্যা ছিল মোট জনসংখ্যার ১০,২২০,০০০ বা ৬%। ২০১২ সালে পরিচালিত একটি ব্যাপক জরিপ অনুযায়ী, মুসলিমরা রাশিয়ার জনসংখ্যার ৬.৫% ছিল।[4] যাইহোক, সামাজিক অস্থিরতার কারণে ইসলামিক সংখ্যাগরিষ্ঠতা সহ দুটি ফেডারেল বিষয়ের জনসংখ্যা জরিপ করা হয়নি, যার জনসংখ্যা একসাথে প্রায় ২মিলিয়ন ছিল, যথা চেচনিয়া এবং ইনুগুশটিয়া।[5]
৯০–১০০% |
|
৭০–৮০% | কাজাখস্তান |
৫০–৭০% | |
৩০–৫০% | উত্তর মেসেডোনিয়া |
১০–২০% |
|
৫–১০% | |
৪–৫% | |
২–৪% | |
১–২% |
|
< ১% |
|
আইনের অধীনে এবং রাশিয়ার রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারা রাশিয়ার ঐতিহ্যবাহী ধর্মগুলির মধ্যে একটি হিসাবে স্বীকৃত, ইসলাম রাশিয়ার ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের একটি অংশ, এবং রাশিয়ান সরকার দ্বারা ভর্তুকি দেওয়া হয়।[6] অর্থোডক্স খ্রীষ্টধর্মের পাশাপাশি একটি প্রধান রুশ ধর্ম হিসেবে ইসলামের অবস্থান ক্যাথরিন দ্য গ্রেটের সময় থেকে শুরু হয়, যিনি ওরেনবার্গ অ্যাসেম্বলির মাধ্যমে ইসলামিক ধর্মযাজক এবং বৃত্তির পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন।[7]
শুরু থেকেই রুশ এবং এর উত্তরসূরি রাষ্ট্রসমূহ প্রতিবেশী, শাসক বা প্রজা হিসেবে মুসলিমদের সংস্পর্শে এসেছে।[8] মুসলিম ভূমিসমূহ থেকে দূরপাল্লার রৌপ্য বাণিজ্য প্রথম রুশ রাষ্ট্রসমূহ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, এবং খ্রিস্টধর্মের পূর্বে ইসলাম ধর্ম রুশ ভূমিতে পৌঁছায়[8]। ৯৮৮ সালে কিয়েভান রাসের শাসক ভ্লাদিমিরের খ্রিস্টধর্ম গ্রহণের কয়েক দশক আগেই দশম শতাব্দীর মধ্যভাগে ভোলগা বুলগার রাষ্ট্রের শাসকরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। ১২৩৬ থেকে ১২৩৭ সালের মধ্যে মোঙ্গলরা ভোলগা বুলগার রাষ্ট্র ধ্বংস করে দেয় এবং এরপর সমগ্র রুশ ভূমিকে পদানত করে। ১৩২৭ সালে গোল্ডেন হোর্ডের শাসক উজবেক খান ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং এর ফলে এক শতাব্দীরও বেশি সময়ের জন্য রুশ ভূমিসমূহের কর্তৃত্ব মুসলিমদের হাতে ন্যস্ত হয়[8]। এরপর মাস্কোভি ও গোল্ডেন হোর্ডের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্যের পরিবর্তন ঘটতে থাকলে মস্কোর রাজপুরুষেরা ক্রমাগত গোল্ডেন হোর্ডের উত্তরাধিকার সংক্রান্ত সংঘর্ষে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়েন। ১৫৫২ সালে রাশিয়ার জার চতুর্থ আইভান গোল্ডেন হোর্ডের উত্তরসূরি রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রাষ্ট্র কাজান দখল করেন[8] এবং ভৌগোলিক সম্প্রসারণের এক সুদীর্ঘ প্রক্রিয়া আরম্ভ করেন। ক্রমে ক্রিমিয়া, ককেশাস এবং মধ্য এশিয়া রাশিয়ার পদানত হয় এবং এর ফলে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষদিকে বহু মুসলিম জাতি রুশ শাসনাধীনে আসে। ১৯৯৭ সালে রুশ সংবিধানে খ্রিস্টধর্ম, বৌদ্ধধর্ম এবং ইহুদিধর্মের পাশাপাশি ইসলাম ধর্মকেও রাশিয়ার 'সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে'র অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।[9] বর্তমানে রাশিয়ার মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৫% ইসলাম ধর্মাবলম্বী।