নিল আর্মস্ট্রং
চাঁদে অবতরণকারী প্রথম মানব / From Wikipedia, the free encyclopedia
নিল এলডেন আর্মস্ট্রং (আগস্ট ৫, ১৯৩০ – আগস্ট ২৫, ২০১২) ছিলেন একজন মার্কিন মহাকাশচারী, বৈমানিক প্রকৌশলী এবং চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণকারী প্রথম ব্যক্তি। তিনি একজন নৌ-বিমানচালক, পরীক্ষামূলক বৈমানিক, এবং একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন।
নিল আর্মস্ট্রং | |
---|---|
জন্ম | নিল এলডেন আর্মস্ট্রং (১৯৩০-০৮-০৫)৫ আগস্ট ১৯৩০ ওয়াপাকোনেটা, ওহাইও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
মৃত্যু | ২৫ আগস্ট ২০১২(2012-08-25) (বয়স ৮২) চিনচিনাটি, ওহাইও, U.S. |
মাতৃশিক্ষায়তন |
|
দাম্পত্য সঙ্গী |
|
সন্তান | ৩ |
পুরস্কার |
|
মহাকাশযাত্রা | |
Man in Space Soonest/NASA astronaut | |
ক্রম | Lieutenant (junior grade), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনী |
মহাকাশে অবস্থানকাল | ৮ দিন, ১৪ ঘণ্টা, ১২ মিনিট, ৩০ সেকেন্ড |
মনোনয়ক |
|
সর্বমোট অভিযান | ১ |
সর্বমোট অভিযানের সময়কাল | ২ ঘণ্টা ৩১ মিনিট |
অভিযান | জেমিনি ৮, এপোলো ১১ |
অভিযানের প্রতীক | |
স্বাক্ষর | |
পারডিউ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক আর্মস্ট্রং বৈমানিক প্রকৌশল-এ শিক্ষাগ্রহণ করেন। মার্কিন নৌবাহিনী তার পড়ার খরচ প্রদান করতেন ‘হলোওয়ে প্ল্যান’ এর তত্ত্বাবধানে। তিনি ১৯৪৯ সালে মিডশিপম্যান (মার্কিন নৌ ক্যাডেট) ও পরবর্তী বছরই একজন নৌ-বিমানচালক হন। তিনি "গ্রামম্যান এফ৯এফ" বিমান থেকে কোরিয়ার যুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেন। ১৯৫১ সালের সেপ্টেম্বরে, "লো বম্বিং রান" করার সময় তার বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয় যখন বিমানটি একটি “আকাশযান প্রতিরোধী কেবলের” সাথে সংঘর্ষের শিকার হয়। বিমানটির একটি ডানা ধ্বংস হয় এবং তাকে বিমান থেকে প্যারাস্যুটের মাধ্যমে লাফ দিতে হয়। যুদ্ধের পর তিনি পারডিউ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর ডিগ্রি লাভ করেন এবং এডোয়ার্ডস এয়ার ফোর্স বেইজ, ক্যালিফোর্নিয়ায় -তে পরীক্ষামূলক বৈমানিক হন। তিনি “সেঞ্চুরি সিরিজ ফাইটার্সের” একজন প্রজেক্ট পাইলট ছিলেন এবং উত্তর আমেরিকার এক্স-১৫ বিমানটি সহ সাতবার উড্ডয়ন করেন। নিল আর্মস্ট্রং মার্কিন বিমানবাহিনীতে ‘বোয়িং এক্স-২০ ডায়না-সোয়ার হিউম্যান স্পেসফ্লাইট’ প্রোগ্রামগুলোতে এবং “ম্যান ইন স্পেস সুনেস্ট” হিসেবে প্রতিদ্বন্দিতা করেন।
আর্মস্ট্রং নাসা’র দ্বিতীয় মহাকাশচারী দলের মহাকাশচারী কর্পসে ১৯৬২ সালে নির্বাচিত হয়ে যোগদান করেন। তিনি তার প্রথম মহাকাশযাত্রা করেন জেমিনি-৮ মহাকাশযানের “কমান্ড পাইলট” হিসেবে। তিনি ছিলেন নাসা’র প্রথম বেসামরিক মহাকাশচারী। তিনি তার এই মিশনে বৈমানিক ডেভিড স্কটের সঙ্গে প্রথমবারের মতো “স্পেসক্রাফট ডকিং” অর্থাৎ মহাশূন্যে দুটি মহাকাশযানকে মিলিত করেন। মিশনটি অবশ্য বাতিল করা হয় যখন আর্মস্ট্রং বিপদজনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন। আর্মস্ট্রং-এর শেষ এবং দ্বিতীয় মহাকাশযাত্রার প্রশিক্ষণের সময়, যেখানে তিনি ছিলেন এপোলো-১১ এর অধিনায়ক, তাকে দুর্ঘটনা থেকে বাঁচতে “লুনার ল্যান্ডিং রিসার্চ ভিহিকল” এর সাহায্যে অবতরণ করতে হয়েছিলো।
জুলাই ২০, ১৯৬৯ তারিখে আর্মস্ট্রং এবং চন্দ্রগামীযানের বৈমানিক বাজ আলড্রিন প্রথমবারের মতো চাঁদে পা রাখেন। তাঁরা পরের দিন দুই ঘণ্টা ত্রিশ মিনিট তাদের “ঈগল” নামক চন্দ্রযানটির বাইরে অবস্থান করেন। সহযাত্রী মাইকেল কলিন্স চন্দ্রযানটিতে অবস্থান করেন। চাঁদে পা ফেলেই আর্মস্ট্রং তার বিখ্যাত উক্তিটি করেন,
“ | "That's one small step for [a] man, one giant leap for mankind." অর্থাৎ, এটি [একজন] মানুষের জন্য অতি ক্ষুদ্র পদক্ষেপ; কিন্তু মানবজাতির জন্য এক বিরাট অগ্রযাত্রা। | ” |
কলিন্স ও আলড্রিনের সাথে আর্মস্ট্রং মার্কিন রাষ্ট্রপতি রিচার্ড নিক্সনের কাছ থেকে “Presidential Medal of Freedom” পদক লাভ করেন। রাষ্ট্রপতি জিমি কার্টার তাকে ভূষিত করেন “Congressional Space Medal of Honor” পদক দিয়ে। ২০০৯ সালে আর্মস্ট্রং ও তার সহযাত্রীদের “Congressional Gold Medal” প্রদান করা হয়।
১৯৭১ সালে নাসা থেকে পদত্যাগ করে আর্মস্ট্রং চিনচিনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং-এ অধ্যাপনা করেন। তিনি মহাকাশযান “চ্যালেঞ্জার” এর দুর্ঘটনার তদন্তের জন্য গঠিত ‘রজার্স কমিশনের’ সদস্য ছিলেন। বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র হিসেবেও দায়িত্বপালন করেন এবং আর্মস্ট্রং ১৯৭৯ সালের জানুয়ারির শুরু থেকে ক্রিস্লার (Chrysler) নামক প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনেও আবির্ভূত হয়েছিলেন।