বাবরি মসজিদ
ভারতের প্রাক্তন মসজিদ / From Wikipedia, the free encyclopedia
বাবরি মসজিদ (অনু. বাবরের মসজিদ) ভারতের উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদ জেলার অযোধ্যা শহরের রামকোট পাহাড়ে অবস্থিত ছিল। যা হিন্দুধর্মের প্রধান দেবতা রামের অনুকল্পিত জন্মভূমি রাম জন্মভূমিতে নির্মিত হয়েছিল বলে মনে করা হয়। ১৫২৭ সালে একটি পুরানো রাম মন্দির ভেঙে ফেলা হয় এবং ১৫২৮ সালে এটি সম্রাট বাবর দ্বারা নির্মিত হয়।[1] এটি আঠারো শতক থেকেই হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরোধের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছিল, যা অযোধ্যা বিবাদ নামে পরিচিত।[2] মসজিদটি মুঘল সম্রাট বাবরের আদেশে সেনাপতি মীর বাকী ১৫২৮–২৯ (৯৩৫ হিজরি বর্ষে) একটি মন্দির কাঠামোর[3] উপর নির্মাণ করেছিলেন। ১৯৯২ সালে হিন্দু জাতীয়তাবাদী জনতা কর্তৃক এটি ভেঙে ফেলা হয়েছিল। যা সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতাকে প্রজ্বলিত করেছিল।
বাবরি মসজিদ | |
---|---|
মসজিদ-ই-জন্মস্থান | |
ধর্ম | |
অন্তর্ভুক্তি | ইসলাম |
অবস্থা | ধ্বংস |
উত্তরাধিকারী | অযোধ্যা মসজিদ |
অবস্থান | |
অবস্থান | রাম জন্মভূমি |
পৌরসভা | অযোধ্যা |
রাজ্য | উত্তরপ্রদেশ |
দেশ | ভারত |
স্থানাঙ্ক | ২৬.৭৯৫৬° উত্তর ৮২.১৯৪৫° পূর্ব / 26.7956; 82.1945 |
স্থাপত্য | |
স্থাপত্য শৈলী | তুঘলক |
সম্পূর্ণ হয় | ১৫২৮; ৪৯৬ বছর আগে (1528) |
ভাঙন | ১৯৯২; ৩২ বছর আগে (1992) |
মসজিদটি রামকোট ("রামের দুর্গ") পাহাড়ের উপর অবস্থিত ছিল।[4] হিন্দু জাতীয়তাবাদীদের মতে, বাকি জায়গাটিতে পূর্ব থেকে বিদ্যমান রামের একটি মন্দির ধ্বংস করেন। এই মন্দিরের অস্তিত্ব একটি বিতর্কের বিষয়।[5][6] এলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিতর্কিত স্থানটির খননকার্য পরিচালনা করে । খননের প্রতিবেদনে উপসংহারে বলা হয়েছে যে মসজিদের ধ্বংসাবশেষের নীচে একটি "বিশাল কাঠামোর" ধ্বংসাবশেষ ছিল যা "উত্তর ভারতের মন্দিরগুলির সাথে জড়িত স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অবশেষের ইঙ্গিত" ছিল। যা বাবরি মসজিদ নির্মাণের জন্য বিশেষভাবে ভেঙে ফেলা হয়েছিল।[3][7][8][9]
১৯ শতকের শুরু থেকে এ বিতর্কের জের ধরে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে একাধিক কলহের ঘটনা ঘটে এবং পাল্টাপাল্টি আদালতে মামলা দায়ের চলতে থাকে। এরপরই সরকার দাঙ্গা ঠেকানোর অভিপ্রায়ে পুরো মসজিদকে সিলগালা করে দেয়।[10] হিন্দু-মুসলিম উভয়ই সে স্থানে প্রবেশাধিকার পেতে আদালতে মামলা দায়ের করে।[11]
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং তাদের সহযোগী সংগঠনের কর্মীরা বাবরি মসজিদ গুড়িয়ে দেয়। যার ফলে সমগ্র ভারত উপমহাদেশে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। এই দাঙ্গা সমগ্র উপমহাদেশজুড়ে প্রায় ২০০০ - ৩০০০ মানুষ মারা যায়।[12][13][14][15][16]
২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে, এলাহাবাদ হাইকোর্ট এই দাবিকে বহাল রাখে যে মসজিদটি রামের জন্মস্থান বলে বিশ্বাস করা জায়গায় নির্মিত হয়েছিল এবং একটি রাম মন্দির নির্মাণের জন্য কেন্দ্রীয় গম্বুজের জায়গাটি প্রদান করে । মসজিদ নির্মাণের জন্য মুসলমানদের জায়গাটির এক-তৃতীয়াংশ জায়গাও দেওয়া হয়েছিল।[17][18] এর বিরুদ্ধে সব পক্ষই উচ্চ আদালতে আপীল করে।[18][18][19] যেখানে একটি পাঁচ বিচারকের বেঞ্চ ২০১৯ সালের আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত একটি শুনানি করে ।[20][21] নিম্ন আদালতের রায় এবং পুরো জায়গা ( ১.১ হেক্টর বা ২+৩ ⁄ ৪ একর জমি) হিন্দু মন্দির নির্মাণের জন্য একটি ট্রাস্টের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এটি সরকারকে উত্তরপ্রদেশ সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডকে একটি বিকল্প ২-হেক্টর (৫-একর) ভূমি দেওয়ার নির্দেশ দেয় যা ১৯৯২ সালে ভেঙে দেওয়া বাবরি মসজিদের প্রতিস্থাপন করে।[22] সরকার অযোধ্যা থেকে ১৮ কিলোমিটার ধন্নিপুর গ্রামে একটি জায়গা বরাদ্দ করে। ২০২১ সালের ২৬ জানুয়ারি মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়।[23][24]