সার্বিয়া ও মন্টিনিগ্রো
From Wikipedia, the free encyclopedia
সার্বিয়া ও মন্টিনিগ্রো, স্টেট ইউনিয়ন অভ সার্বিয়া ও মন্টিনিগ্রো নামেও পরিচিত। এটি দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের একটি দেশ যা ১৯৯২ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ফেডারেল রিপাবলিক অভ যুগোশ্লাভিয়া নামে পরিচিত ছিল। ১৯৯২ সালে যুগোস্লাভিয়ার ভাঙনের পর এর দুইটি ফেডারেল প্রজাতন্ত্র থেকে সার্বিয়া ও মন্টিনিগ্রো তৈরি হয়। ১৯৯২ সালে সার্বিয়া ও মন্টিনিগ্রো প্রজাতন্ত্র দুটি একটি ফেডারেশন তৈরি করে, যা ফেডারেল রিপাবলিক অভ যুগোশ্লাভিয়া বা সংক্ষেপে যুগোশ্লাভিয়া নামে পরিচিত।
ফেডারেল রিপাবলিক অফ ইউগোস্লাভিয়া (১৯৯২-২০০৩) স্টেট ইউনিয়ন অফ সার্বিয়া এন্ড মন্টিনিগ্রো (২০০৩–২০০৬) | |
---|---|
জাতীয় সঙ্গীত: | |
রাজধানী | বেলগ্রেড (প্রশাসনিক / বিধানিক) পোদগোরিটা (বিচারসংক্রান্ত, ২০০৩–২০০৬)a |
বৃহত্তম নগরী | বেলগ্রেড |
জাতীয়তাসূচক বিশেষণ | ইউগোস্লাভ (২০০৩ অবধি) |
সরকার | ফেডারেল সংসদীয় সাংবিধানিক গণতন্ত্র (১৯৯২-২০০৩) জোট সরকার (২০০৩-২০০৬) |
মুদ্রা | সার্বিয়া ও কসভোর সার্বিয় অংশেঃ
মন্টিনিগ্রো ও কসভোর আলবেনীয় অংশেঃ c
|
সময় অঞ্চল | ইউটিসি+1 (সিইটি) |
ইউটিসি+2 (সিইএসটি) | |
গাড়ী চালনার দিক | ডান |
কলিং কোড | +৩৮১ |
ইন্টারনেট টিএলডি | .yu |
ফেডারেল ইউনিয়ন তৈরির প্রথম কয়েকবছর, দেশটি পূর্বতন যুগোশ্লাভিয়ার একমাত্র উত্তরাধিকারী হিসেবে আন্তর্জাতিক মহলে নিজেদেরকে দাবি করে কিন্তু অন্যান্য প্রজাতন্ত্র কর্তৃক বিরোধিতার সম্মুখীন হয়। জাতিসংঘেও তাদের সদস্যপদের আবেদন খারিজ করা হয়। [1] পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে ২০০০ সালে স্লোবোদান মিলোসেভিচ কে ফেডারেলের রাষ্ট্রপতি থেকে অপসারণের পর দেশটি তাদের এই দাবি বাতিল করে এবং যুগোশ্লাভিয়া শান্তি সম্মেলনের সালিসি কমিশনের শর্তানুযায়ী অন্যান্য প্রজাতন্ত্রের সাথে যৌথ উত্তরাধিকারের শর্তের সাথে ঐকমত্যে পৌঁছায়। ২০০০ সালের ২৭ শে অক্টোবর দেশটি জাতিসংঘের সদস্যপদের জন্য আবারো আবেদন করে এবং ১ নভেম্বর আবেদনটি গৃহীত হয়।[2]
ফেডারেল রিপাবলিক অভ যুগোশ্লাভিয়া (সংক্ষেপে এফআরওয়াই) স্লোবোদান মিলোসেভিচ দ্বারা প্রভাবিত ছিল। যিনি প্রথমদিকে সার্বিয়ার রাষ্ট্রপতি (১৯৮৯-১৯৯৭) ছিলেন এবং পরবর্তীতে যুগোশ্লাভিয়ার রাষ্ট্রপতি (১৯৯৭-২০০০) হন। এসময়ের মধ্যে তিনি বেশ কয়েকজন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে জোরপুর্বক অপসারণের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেন।[3] প্রথমদিকে মন্টিনিগ্রো সরকারে বিদ্যমান তার বহু সমর্থক পরবর্তীতে তার নীতির কারণে দূরে সরতে থাকেন। ১৯৯৬ সালের ক্ষমতার পটপরিবর্তনে তা চরম পরিণতি প্রাপ্ত হয়, যখন তার সাবেক মিত্র মিলো দুকানোভিচ তার নীতি সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী করে তোলেন, মন্টিনিগ্রোর ক্ষ্মতাসীন দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন এবং মিলোসেভিচ সরকারের প্রতি অনুগত সাবেক নেতা মমির বুলাতোভিচ কে অপসারণ করেন। বুলাতোভিচকে ফেডারেল প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেলগ্রেডে নিয়োগ দেয়া হলে দুকানোভিচ মন্টিনিগ্রো সরকার আলাদাভাবে চালানো শুরু করেন এবং সার্বিয়া থেকে ধীরে ধীরে বিচ্ছিন্নতার দিকে নিয়ে যান। এভাবেই ১৯৯৬ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সার্বিয়া ও মন্টিনিগ্রো বাহ্যত একীভূত রাষ্ট্র হিসেবে দৃশ্যমান হলেও স্থানীয় পর্যায়ে আলাদাভাবে পরিচালিত হতে থাকে, এসময় সার্বিয়ার প্রাশাসনিক কেন্দ্রবিন্দু ছিল বেলগ্রেড আর মন্টিনিগ্রোর জন্য পোদোগোরিকা।
কার্যত আলাদাভাবে পরিচালিত হওয়া ফেডারেল রাষ্ট্রটির সামরিক ক্ষেত্র ব্যতীত অন্য সকল কার্যাবলি দুটি আলাদা রাষ্ট্রের ন্যায় পরিচালিত হত। এমনকি অর্থনীতিও আলাদা ছিল, মন্টিনিগ্রোতে ইউরোর প্রচলন থাকলেও সার্বিয়াতে তা ছিল না। এমতাবস্থায় ২১ মে, ২০০৬ সালে মন্টিনিগ্রো স্বাধীনতা প্রস্তাব গৃহীত হয়, যে প্রস্তাবে ৫৫.৫% ভোটার স্বাধীনতার পক্ষে ভোট প্রদান করেন। ৩ জুন ২০০৬ সালে মন্টিনিগ্রো আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করলে ৮৮ বছর পুর্বের যুগোশ্লাভিয়া দেশটির সর্বশেষ ইউনিয়ন হিসেবে প্রচলিত রাষ্ট্রটি ভেঙে যায়। এর পরবর্তীতে সার্বিয়া এই ইউনিয়নটির উত্তরাধিকারী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে, যেখানে মন্টিনিগ্রো নতুন রাষ্ট্র হিসেবে আন্তর্জাতিক সংগঠনসমূহের সদস্যপদ লাভের জন্য আবেদন করতে থাকে।