ট্যুকো ব্রাহে
From Wikipedia, the free encyclopedia
ট্যুকো ব্রাহে (লাতিনীকৃত নাম: Tycho Brahe, ডেনীয় নাম: Tyge Ottesen Brahe[1][2][3]) (১৪ই ডিসেম্বর, ১৫৪৬ - ২৪শে অক্টোবর, ১৬০১) ডেনীয় অভিজাত সম্প্রদায়ের ব্যক্তি যিনি নিখুঁত এবং নির্ভুল জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণের জন্য বিখ্যাত হয়ে আছেন। তার আদি বাসস্থান Scania-তে যেটি তখন ডেনমার্কের অন্তর্ভুক্ত থাকলেও বর্তমানে আধুনিক সুইডেনের একটি প্রদেশ। তিনি জীবদ্দশায় জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং আলকেমিবিদ হিসেবে সুখ্যাত ছিলেন।
ট্যুকো ব্রাহে | |
---|---|
জন্ম | ১৪ ডিসেম্বর ১৫৪৬ |
মৃত্যু | ২৪ অক্টোবর ১৬০১ (৫৪ বছর বয়সে) |
জাতীয়তা | ডেনীয় |
শিক্ষা | ব্যক্তিগত |
পেশা | অভিজাত ব্যক্তি, জ্যোতির্বিদ |
দাম্পত্য সঙ্গী | Kristine Barbara Jørgensdatter |
সন্তান | ৮ |
পিতা-মাতা | Otte Brahe এবং Beate Bille |
১৫৭৩ সালে তার দে নোভা স্তেলা (নতুন তারাটি সম্পর্কে) বইটিতে তিনি এরিস্টটলের সুস্থির এবং অপরিবর্তনীয় খ-গোলকের ধারণাকে ভুল বলে অভিহিত করেন। নিখুঁত পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেন যে, নবতারা (বর্তমানে যা অতিনবতারা নামে পরিচিত), বিশেষ করে ১৫৭২ সালের অতিনবতারাটি, পৃথিবী এবং চাঁদের মধ্যে অবস্থিত হলে যে পরিমাণ লম্বন দেখানোর কথা তার থেকে বেশি লম্বন দেখাচ্ছে এবং তথাপি এগুলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের অভ্যন্তরে অবস্থিত লেজবিহীন ধূমকেতু নয়, বরং বায়ুমণ্ডলের বাইরে অবস্থিত। একই ধরনের পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে আরও প্রতিষ্ঠিত করেন যে ধূমকেতু বায়ুমণ্ডলের ভেতরকার ঘটনা নয়, এবং যথারীতি তারা সে সময় গৃহীত অপরিবর্তনীয় খ-গোলকের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করে।[4]
ট্যুকো ব্রাহেকে Hven দ্বীপে অনেক বড় একটি সম্পত্তি দেয়া হয়েছিল এবং Uraniborg নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের অর্থও প্রদাণ করা হয়েছিল। এই গবেষণা প্রতিষ্ঠানে তিনি জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণের জন্য বড় বড় যন্ত্র নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে Stjerneborg নামে একটি গবেষণাগার নির্মাণ করেন মাটির নিচে। তখন এটিও বুঝতে পারেন যে পূর্বের গবেষণাগারটির যন্ত্রপাতি যথেষ্ট সুস্থির ছিল না। এই দ্বীপে তিনি বেশ স্বায়ত্তশাসন ভোগ করতেন, এমনকি নিজের গবেষণার ফলাফল প্রকাশের জন্য উপযোগী কাগজ সরবরাহের জন্য সেখানে নিজে কাগজ তৈরির কারখানা করেছিলেন। ১৫৯৭ সালে ডেনমার্কের রাজার সাথে মতানৈক্য হওয়ার পর বোহেমিয়ার রাজা এবং পুণ্য রোমান সম্রাট রুডলফ ২ তাকে প্রাগ শহরে আমন্ত্রণ জানান। এখানে তিনি রাজ-জ্যোতির্বিদ পদ গ্রহণ করেন, নতুন একটি মানমন্দির নির্মাণ করেন প্রাগের নিকটে অবস্থিত Benátky nad Jizerou নামক স্থানে। এখানে ১৬০০ থেকে ১৬০১ সালে তার মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তাকে সহযোগী হিসেবে ছিলেন বিখ্যাত জার্মান জ্যোতির্বিদ ইয়োহানেস কেপলার। কেপলার ট্যুকোর মৃত্যুর পর তার উপাত্ত ব্যবহার করেই গ্রহীয় গতির সূত্র প্রণয়ন করেছিলেন। বলা হয়, ট্যুকোর মত নিখুঁত পর্যবেক্ষণ সে সময় আর কারো পক্ষে করা সম্ভব ছিল না।
জ্যোতির্বিদ হিসেবে ট্যুকোর অবস্থান ছিল নিকোলাউস কোপের্নিকুস এবং টলেমির মাঝামাঝি। তিনি কোপের্নিকুসীয় জগতের জ্যামিতিক সুবিধা এবং টলেমীয় জগতের দার্শনিক সুবিধা একত্রিত করে নতুন একটি বিশ্ব ব্যবস্থা তৈরি করতে চেয়েছিলেন যার নাম ট্যুকোনীয় জগৎ। উপরন্তু, তিনি ছিলেন শেষ জ্যোতির্বিদদের একজন যারা কোন দুরবিন ছাড়া কেবল খালি চোখে সকল পর্যবেক্ষণ করেছেন।