জার্মানি
মধ্য-পশ্চিম ইউরোপের যুক্তরাষ্ট্রীয় সংসদীয় প্রজাতন্ত্র / From Wikipedia, the free encyclopedia
জার্মানি (/ˈdʒɜːrməni/ (শুনুনⓘ); জার্মান: Deutschland), আলামানীয়া বা আলমানীয়া, সরকারিভাবে সংযুক্ত প্রজাতন্ত্রী জার্মানি (জার্মান: Bundesrepublik Deutschland, "বুন্ডেস্রেপুব্লিক ডয়চ্লান্ট্", উচ্চারণ [ˈbʊndəsʁepuˌbliːk ˈdɔʏtʃlant] (শুনুনⓘ)),[10] ইউরোপের অন্যতম প্রধান শিল্পোন্নত দেশ। এটি ১৬টি রাজ্য নিয়ে গঠিত একটি সংযুক্ত ইউনিয়ন। এটি মধ্য ইউরোপ ও পশ্চিম ইউরোপের একটি দেশ। এই দেশটি উত্তর সীমান্তে উত্তর সাগর ও বাল্টিক সাগরের মাঝখানে এবং দক্ষিণে আল্পস পর্বতমালার মাঝখানে অবস্থিত। জার্মানির পূর্ব সীমান্তে পোল্যান্ড ও চেক প্রজাতন্ত্র, পশ্চিম সীমান্তে ফ্রান্স, লুক্সেমবুর্গ, বেলজিয়াম এবং নেদারল্যান্ড্স, উত্তর সীমান্তে ডেনমার্ক এবং দক্ষিণ সীমান্তে অস্ট্রিয়া ও সুইজারল্যান্ড এবং অবস্থিত। জার্মানির ইতিহাস জটিল এবং এর সংস্কৃতি সমৃদ্ধ, তবে ১৮৭১ সালের আগে এটি কোন একক রাষ্ট্র ছিল না। ১৮১৫ থেকে ১৮৬৭ পর্যন্ত জার্মানি একটি কনফেডারেসি এবং ১৮০৬ সালের আগে এটি অনেকগুলি স্বতন্ত্র ও আলাদা রাজ্যের সমষ্টি ছিল।
সংযুক্ত প্রজাতন্ত্রী জার্মানি Bundesrepublik Deutschland | |
---|---|
নীতিবাক্য:
| |
জার্মানি-এর অবস্থান (গাঢ় সবুজ) – ইউরোপে (সবুজ & গাঢ় ধূসর) | |
রাজধানী ও বৃহত্তম নগরী বা বসতি | বার্লিন |
সরকারি ভাষা | জার্মান |
নৃগোষ্ঠী | |
জাতীয়তাসূচক বিশেষণ | জার্মান |
সরকার | যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র |
• রাষ্ট্রপতি | ফ্রাঙ্ক-ওয়াল্টার স্টিনমিয়ার |
ওলাফ শলৎস | |
• বুনডেসটাগের সভাপতি | উলফগ্যাং স্কুবল |
• বুনডেসরাটের সভাপতি | মাইকেল মুলার |
আইন-সভা | |
• উচ্চকক্ষ | বুনডেসরাট |
• নিম্নকক্ষ | বুনডেস্টাগ |
প্রতিষ্ঠাপন | |
ফেব্রুয়ারি ২, ৯৬২; ১০৬২ বছর আগে (February 2, 962) | |
• একীকরণ | ১৮ই জানুয়ারি, ১৮৭১ |
• যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র | ২৩শে মে, ১৯৪৯ |
৩রা অক্টোবর, ১৯৯০ | |
আয়তন | |
• মোট | ৩,৫৭,৩৮৬ কিমি২ (১,৩৭,৯৮৮ মা২) (৬২তম) |
• পানি (%) | ২.৩৪% |
জনসংখ্যা | |
• ২০১৮ আনুমানিক | ৮২,৮০০,০০০ [6] (১৭তম) |
• ২০১১ আদমশুমারি | ৮০,২১৯,৬৯৫[7] (১৬তম) |
• ঘনত্ব | ২২৫/কিমি২ (৫৮২.৭/বর্গমাইল) (৫৮তম) |
জিডিপি (পিপিপি) | ২০১২ আনুমানিক |
• মোট | $৩.১৯৭ ট্রিলিয়ান[8] (৫ম) |
• মাথাপিছু | $৩৯,০২৮[8] (১৭তম) |
জিডিপি (মনোনীত) | ২০১২ আনুমানিক |
• মোট | $৩.৪০১ ট্রিলিয়ান[8] (৪র্থ) |
• মাথাপিছু | $৪১,৫১৩[8] (২২তম) |
জিনি (২০০৬) | ২৭ নিম্ন |
মানব উন্নয়ন সূচক (২০১৩) | ০.৯২০[9] অতি উচ্চ · ৫ম |
মুদ্রা | ইউরো (€) (EUR) |
সময় অঞ্চল | ইউটিসি+১ (সিইটি) |
ইউটিসি+২ (সিইডিটি) | |
গাড়ী চালনার দিক | right |
কলিং কোড | +49 |
ইন্টারনেট টিএলডি | .de |
আয়তনের দিক থেকে জার্মানি ইউরোপের ৭ম বৃহত্তম রাষ্ট্র। উত্তর উত্তর সাগর ও বাল্টিক সাগরের উপকূলীয় নিম্নভূমি থেকে মধ্যভাগের ঢেউ খেলানো পাহাড় ও নদী উপত্যকা এবং তারও দক্ষিণে ঘন অরণ্যাবৃত পর্বত ও বরফাবৃত আল্পস পর্বতমালা দেশটির ভূ-প্রকৃতিকে বৈচিত্র্যময় করেছে। দেশটির মধ্য দিয়ে ইউরোপের অনেকগুলি প্রধান প্রধান নদী যেমন রাইন, দানিউব, এলবে প্রবাহিত হয়েছে এবং দেশটিকে একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত করতে সাহায্য করেছে।
জার্মানিতে নগরায়নের হার অত্যন্ত উঁচু। বার্লিন দেশের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। তবে প্রাক্তন পশ্চিম জার্মানির রাজধানী বন শহরে এখনও বেশ কিছু সরকারী অফিস রয়েছে। জার্মান ভাষা এখানকার প্রধান ভাষা। দুই-তৃতীয়াংশ লোক হয় রোমান ক্যাথলিক অথবা প্রোটেস্টান্ট খ্রিস্টান।
জার্মানরা পশ্চিমা সংস্কৃতিতে বহু অবদান রেখেছে। জার্মানিতে বহু অসাধারণ লেখক, শিল্পী, স্থপতি, সঙ্গীতজ্ঞ এবং দার্শনিক জন্মগ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে সম্ভবত ইয়োহান সেবাস্টিয়ান বাখ ও লুডভিগ ফান বেটোফেন সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পরিচিত। ফ্রিডরিশ নিৎসে, ইয়োহান ভোলফগাং ফন গোটে এবং টমাস মান জার্মান সাহিত্যের দিকপাল।
জার্মানি বিশ্বের একটি প্রধান শিল্পোন্নত দেশ। এটির অর্থনীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র , চীন ও জাপানের পরে বিশ্বের ৪র্থ বৃহত্তম। জার্মানি লোহা, ইস্পাত, যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম এবং মোটরগাড়ি রপ্তানি করে। জার্মানি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি।
১৯৪৫ সালে মিত্রশক্তি যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন জার্মানিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত করে। মিত্র দেশগুলি দেশটিকে চারটি অঞ্চলে ভাগ করে: ব্রিটিশ, ফরাসি, মার্কিন ও সোভিয়েত সেনারা একেকটি অঞ্চলের দায়িত্বে ছিল। সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং পশ্চিমা শক্তিগুলির মধ্যকার মিত্রতা ১৯৪০-এর দশকের শেষে ভেঙে গেলে সোভিয়েত অঞ্চলটি জার্মান গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র তথা পূর্ব জার্মানিতে পরিণত হয়। পশ্চিম-নিয়ন্ত্রিত বাকী তিন অঞ্চল একত্রিত হয়ে পশ্চিম জার্মানি গঠন করে। যদিও জার্মানির ঐতিহাসিক রাজধানী বার্লিন পূর্ব জার্মানির অনেক অভ্যন্তরে অবস্থিত ছিল, তা সত্ত্বেও এটিকেও দুই দেশের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। কিন্তু বহু লক্ষ পূর্ব জার্মান অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক পশ্চিম জার্মানিতে অভিবাসী হওয়া শুরু করলে ১৯৬১ সালে পূর্ব জার্মানি সরকার বার্লিনে একটি প্রাচীর তুলে দেয় এবং দেশের সীমান্ত জোরদার করে।
১৯৮৯ সালে পূর্ব ও পশ্চিম বার্লিনের বাসিন্দারা বার্লিন প্রাচীর ভেঙে ফেলে। এই ঘটনাটিকে পূর্ব ইউরোপে সাম্যবাদের পতন ও জার্মানির পুনঃএকত্রীকরণের প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হয়। আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে ১৯৯০ সালের ৩রা অক্টোবর দুই জার্মানি একত্রিত হয়ে জার্মান ফেডারেল প্রজাতন্ত্র গঠন করে। তবে দুই জার্মানির ভিন্ন সংস্কৃতি ও রীতিনীতির মিলন একত্রিত জার্মানির সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় সমস্যার সৃষ্টি করে; উচ্চ বেকারত্ব এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার হ্রাস এদের মধ্যে অন্যতম।